অর্ডার দেওয়ার ৩০ বছর পর পাওয়া যাবে যে ‘বিফ রোল’

বিফ রোল
জাপানের ‘কোবে বিফ রোল’। ছবি: সংগৃহীত

শুনতে অবাক লাগছে? ভাবছেন, লেখায় ভুল হয়েছে! না, আবারো বলছি, এই 'বিফ রোল' এখন কিনতে চাইলে আপনাকে ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। জনপ্রিয়তার কারণেই এই দীর্ঘ অপেক্ষা।

১৯২৬ সালে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে হিয়োগো দ্বীপের তাকাসাগো শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় 'আসাহিয়া' মাংসের দোকান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই পারিবারিক দোকানে 'কোবে বিফ রোল' বানানো শুরু হয়। এই রোলে গরুর মাংসের সঙ্গে থাকে কড়া ভাজা আলু।

২০০০ সালের পর এই রোল ইন্টারনেট জগতে 'রোল মডেল' হয়ে উঠে। ধীরে ধীরে দীর্ঘ হয় ক্রেতার লাইন।

আজ সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

'আসাহিয়া'র তৃতীয় প্রজন্মের মালিক শিগেরু নিত্তা গণমাধ্যমটিকে বলেন, '১৯৯৯ সালে প্রথম আমাদের পণ্যগুলো অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়। সে বছরই পরীক্ষামূলকভাবে কড়া ভাজা রোল বিক্রি করি।'

কিশোর শিগেরু নিত্তা তার বাবার সঙ্গে গরুর মাংস কিনতে স্থানীয় খামারে যেতেন। ১৯৯৪ সালে ৩০ বছর বয়সে তিনি এই দোকানের দায়িত্ব নেন।

'প্রথম প্রথম ক্রেতারা অনলাইনে পেমেন্ট দিতে দ্বিধা করতেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমরা কম দামে সুস্বাদু খাবার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই। একেকটি কড়া ভাজা রোল ২৭০ ইয়েনে (১ ডলার ৮০ সেন্ট) বিক্রি করি। যদিও শুধু এক টুকরো মাংসের দাম পড়তো ৪০০ ইয়েন (২ ডলার ৭০ সেন্ট)।'

তিনি জানান, প্রথম দিকে লোকসান কমাতে সপ্তাহে ২০০ 'রোল' তৈরি করা হতো। এখন প্রতিদিন ২০০ 'রোল' তৈরি করা হয়।

২০০০ সালের দিকে সংবাদমাধ্যমে 'আসাহিয়া' নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এর জনপ্রিয়তা ব্যাপকহারে বেড়ে যায়।

নিত্তা বলেন, '২০১৬ সালে আমরা রোল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তখন অপেক্ষমাণ তালিকা ১৪ বছরে গিয়ে ঠেকেছিল। আমরা অর্ডার নেওয়াও বন্ধ করে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু, ফোনের পর ফোন আসতে শুরু করে।'

'২০১৭ সালে রোলের দাম বাড়িয়ে আবার অর্ডার নেওয়া শুরু করি,' যোগ করেন তিনি।

আরও বলেন, 'সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তাই রোলের দাম বাড়িয়ে ৫০০ ইয়েন (৩ ডলার ৪০ সেন্ট) করেছি। তাতেও লোকসান হচ্ছে।'

অলাভজনক এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিতে ৪ ধরনের 'কোবে বিফ রোল' তৈরি করা হয়। 'আসাহিয়া'র প্রিমিয়ার কোবে বিফ রোলের জন্য বর্তমানে অপেক্ষা করতে হয় ৪ বছর।

'বর্তমানে যারা রোলটি সংগ্রহ করছেন তারা ১০ বছর আগে অর্ডার দিয়েছিলেন' জানিয়ে নিত্তা বলেন, 'আরও ৩০ বছর এই অলাভজনক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াটা খুবই কষ্টকর। কেননা, খাবার ও শ্রমের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে।'

৫৮ বছর বয়সী শিগেরু নিত্তা জানান, তাদের 'আসাহিয়া' এখন আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল। তিনি চাচ্ছেন দোকানটাকে একটু বড় করতে, যাতে পর্যটকরা খানিকক্ষণ সেখানে বসতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

8h ago