বিমানকর্মীর অবহেলায় গালফ এয়ারের উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত, ১ কোটি ছাড়াতে পারে ক্ষতিপূরণ

বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, ‘বিমানের গ্রাউন্ড সাপোর্ট কর্মীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের’ কারণে এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: বিমানের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সরঞ্জামের আঘাতে গালফ এয়ারের একটি বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজের ফুসেলাজ (বিমানের মূল কাঠামো) ক্ষতিগ্রস্ত ও অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাহরাইনের জাতীয় উড়োজাহাজ সংস্থা গালফ এয়ার কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।

জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর দুর্ঘটনাটি ঘটে। তখন থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উল্লেখিত উড়োজাহাজটি আটকে আছে।

এ ঘটনার তদন্তের জন্য একজন প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন।

কমিটিকে ২ দিনের মধ্যে তাদের অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জাহিদ হোসেন আরও বলেন, 'তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আমরা দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং ক্ষতিপূরণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।'

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার দায়িত্বে আছে বিমান।

বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, 'বিমানের গ্রাউন্ড সাপোর্ট কর্মীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের' কারণে এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

১০ এপ্রিল বিমানের একটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর বিমানকে হ্যাঙ্গারে নেওয়ার সময় একই সংস্থার আরেকটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। দ্বিতীয় বিমানটি তখন হ্যাঙ্গারে রাখা ছিল।

এই সংঘর্ষে ৭৭৭ বিমানের নাকের ওপর বসানো চোঙা আকৃতির 'র‍্যাডোম', সামনের বাল্কহেড এবং ৭৩৭ বিমানের হরাইজন্টাল স্ট্যাবিলাইজারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জুনে বাংলাদেশ বিমানের একটি ৭৮৭ বিমান হ্যাঙ্গারে রাখা আরেকটি ৭৩৭ বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খেলে উভয় বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই মাসে বোর্ডিং ব্রিজের সঙ্গে বিমানের আরেকটি ৭৮৭ উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়।

টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'বিমানের গ্রাউন্ড কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংস্থাটির ২টি উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

উড্ডয়ন বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কর্মীরা আদৌ সাধারণ পরিচালন পদ্ধতি (এসওপি) অনুসরণ করছে কি না।

ঢাকায় সেবাদানরত বিভিন্ন বিদেশি উড়োজাহাজ সংস্থার কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এসব ঘটনার কারণে দেশে ও দেশের বাইরে বিমানের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

বিমানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এ মোমেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ ধরনের ঘটনা বিমানের কর্মীদের খামখেয়ালী আচরণের বিষয়টি প্রকাশ করে।

'খুব সম্ভবত সিবিএ ও ইউনিয়ন নেতাদের প্রভাবের কারণে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলেই এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে', যোগ করেন তিনি। 

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

 

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

1h ago