বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন আমরা অনেকটা বাস্তবায়ন করেছি: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন আমরা অনেকটা বাস্তবায়ন করেছি।

আজ শুক্রবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমাদের নারীদের শিক্ষা, নারীদের জাগরণ, নারীদের যতটুকু অর্জন এর পেছনে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। তিনি যদি সেই অচলায়তন ভেঙে নিজে শিক্ষা গ্রহণ করে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা না করতেন তাহলে আমরা আজকে যে যেখানে আছি, কেউ থাকতে পারতাম না।

বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ছিল মেয়েরা জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হবে। নারীরা সমস্ত দায়িত্ব নেবে। তিনি যে আকাঙ্ক্ষা করে গেছেন আমরা কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা অর্জনের পথে, বলেন তিনি।

নারী অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি দেখেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মনে হয় যেন ছেলেদের থেকে আমাদের মেয়েরা বেশি স্মার্ট। ছেলেরা তো অনেক স্মার্ট। মন খারাপ করার কিছু নেই। বিমান, নৌ, সেনাবাহিনী...আগে বর্ডার গার্ডে কোনো মেয়ে ছিল না। সব জায়গায় মেয়েদের দিয়েছি। জাতির পিতা পুলিশে কিছু মেয়ে নিয়োগ দিয়ে গিয়েছিলেন। আমি দেখলাম কোনো ডিসি, এসপি পদে মেয়েদের স্থান নেই। বলা হতো, মেয়েরা পারবে না। সচিব নেই। মেয়েদের স্থান অনেক নীচে। সিনিয়রিটির ক্ষেত্রে এক সঙ্গে তালিকা করা হতো। আমি বলেছি, মেয়েদের আলাদা লিস্ট চাই। সব জায়গায় ফাইট করে আনতে হয়েছে। তারপরও তারা সচিব পর্যায়ে উঠতে পারে না। প্রশাসনে একটি ব্যবস্থা আছে, রাষ্ট্রপতির কোটায় ১০ শতাংশ অফিসার নিয়োগ দেওয়া যায়। আমি সেই কোটা ধরে প্রথম মেয়ে নিয়োগ দিলাম। আমার অফিসে সচিব হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে প্রথম নিয়োগ দিলাম। এভাবে দরজা খুলে দিয়েছি। প্রথম এসপি যখন করতে গেছি, প্রচণ্ড বাধা। মেয়েরা এসপি হবে! আমি বলেছি, হ্যাঁ, মেয়েরাই এসপি হবে।

আমাদের নারীরা যারা বাইরে কাজ না করে শুধু সংসারে কাজ করে...একটি সংসার গুছিয়ে কথা, এটা কিন্তু অনেক কাজ। এটাও তাদের কর্মক্ষেত্রে ও শ্রম হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। অনেকে গবেষণা করেন, মেয়েরা কোথায় কোথায় কাজ করছে, এই জায়গায় যেখানে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়, সেই জায়গাকে কর্মক্ষেত্র হিসেবে গ্রহণ করা হয় না। আমার মনে হয়, এটা ঠিক না—বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তৃতীয় লিঙ্গ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এরা তো কোনো অপরাধ করেনি! এরা তো বাবা-মায়েরই সন্তান। বাবা-মাকে ফেলে দিয়ে তাদের রাস্তায় চলে যেতে হবে কেন? তাদের কোনো জীবন-জীবিকার কিছু থাকবে না এটা তো হতে পারে না। শুধু নারী অধিকার-নারী অধিকার বলে অনেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, কখনো এই শ্রেণির কথা কেউ চিন্তা করেননি। আমরা সংবিধানে তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবে, লেখাপড়া শিখবে, চাকরি পাবে, কাজ-প্রশিক্ষণ পাবে, একটা সুস্থ জীবন তারা পাবে। প্রতিটি ফরমে নারী-পুরুষের সঙ্গে থার্ড জেন্ডার আমরা লাগিয়ে দিয়েছি।
 
শেখ হাসিনা বলেন, বেগম রোকেয়ার যে স্বপ্ন, বাংলাদেশে বলতে গেলে সে স্বপ্ন পূরণ প্রায় করেছি। আমাদের সংসদে স্পিকার, লিড অব দ্য হাউস, লিড অব দ্য অপজিশন, ডেপুটি লিডার; ৪ জনই মহিলা ছিলাম। দুঃখজনক বিষয়, সাজেদা চৌধুরী কিছু দিন আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে এই শূন্যস্থান পূরণ আবার একজন নারীকে দিয়েই করবো। আমাদের সবাই যোগ্য, আমি কাউকে অযোগ্য বলছি না। এই সমাজকে তো উৎসাহিত করতে হবে।

বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন আমি বলতে পারি আমরা অনেকটা বাস্তবায়ন করেছি। আজকে হয়তো তিনি থাকলে খুশি হতেন, বলেন শেখ হাসিনা।

Comments

The Daily Star  | English
How do we avoid a debt trap?

How do we avoid a debt trap?

The debt bubble is ominous, given Bangladesh’s narrow export base and heavy reliance on remittance inflows.

6h ago