শিক্ষক-স্বাস্থ্যকর্মী ও দক্ষ শ্রমিক নেবে অস্ট্রেলিয়া, ৩ দিনে ভিসার সিদ্ধান্ত

অস্ট্রেলিয়ার অপেরা হাউস | রয়টার্স ফাইল ফটো

স্কুল শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী ও বেশ কয়েকটি পেশার দক্ষ শ্রমিকদের ৩ দিনের মধ্যে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার।

যে পেশাগুলোকে এখন অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, এর মধ্যে আছে স্কুল শিক্ষক, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ সহায়তা কর্মী, চাইল্ড কেয়ার সেন্টার ম্যানেজার, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, পরামর্শদাতা, মনোবিজ্ঞানী, সমাজকর্মী ও চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ।

প্রতিটি বিভাগের মধ্যে অস্থায়ী ও স্থায়ী দক্ষ ভিসা আবেদনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বাইরে আবেদনকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এই ভিসা আবেদন কোনো এজেন্সির মাধ্যমে করা যাবে না। কোনো দেশের কোনো এজেন্সিকে শ্রমিক নিয়োগ অথবা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

যারা আবেদন করতে ইচ্ছুক, তারা সরাসরি অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন ও মাইগ্রেশন বিভাগের ওয়েব সাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

সরকারি নির্দেশনায় যেহেতু কোনো সুনির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের কথা উল্লেখ করা হয়নি, তাই বাংলাদেশিরাও এই আবেদন করতে পারবেন।

প্রায় আড়াই বছর করোনা মহামারির কারণে বন্ধ ছিল অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত। এর প্রভাব পড়েছে বিদেশি শ্রমিক-নির্ভর দেশটির অর্থনীতিতে।

শ্রমিক সংকটে অস্ট্রেলিয়ার অনেক কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।

লেবার পার্টির সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শ্রমিক সংকট থেকে দেশটিকে উদ্ধারের নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বিদেশি দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিকদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিসা প্রদান।

এ ছাড়াও, বিগত সরকারের ভিসা নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে।

হোম অ্যাফেয়ার্স বিভাগ দক্ষ ভিসা আবেদনগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করছে। 'মাইগ্রেশন স্কিলড অকুপেশন লিস্ট' ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে এর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

এই পরিকল্পনার অধীনে ভিসা আবেদনগুলো খুব ধীর গতিতে বিবেচনা করা হতো। ফলে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মী সংকট থাকলেও ব্যাকলগের কারণে এর সমাধান হয়নি।

২০২২-২৩ সালে অস্থায়ী দক্ষ ভিসার অনুদান গত বছরের তুলনায় বর্তমানে ১২০ শতাংশ বেড়েছে।

এ বছরের শেষ নাগাদ প্রায় ৬ লাখ ভিসা আবেদন ব্যাকলগের জন্য প্রক্রিয়াধীন ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে তা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।

গত মে'র শুরুর তুলনায় এখন প্রায় ৪৪২ মাইগ্রেশন বিষয়ে অভিজ্ঞ অতিরিক্ত কর্মী অস্থায়ী ও মাইগ্রেশন ভিসা প্রক্রিয়ার কাজ করছেন।

স্বরাষ্ট্র অধিদপ্তর বলেছে, নতুন মন্ত্রী পর্যায়ের নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, দক্ষ শ্রমিক ভিসাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

'এই আবেদনগুলো এখন ৩ দিনের মধ্যে মূল্যায়ন করা হচ্ছে' বলে সংবাদমাধ্যম এসবিএস নিউজকে বিভাগের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।

সরকার অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন নিয়ে বিস্তৃত পর্যালোচনা ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, ৩ বিশেষজ্ঞ আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন এবং মার্চ বা এপ্রিলের শেষের দিকে চূড়ান্ত কৌশল দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইমিগ্রেশনমন্ত্রী অ্যান্ড্রু গাইলস গত নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন কমিটির মাইগ্রেশন কনফারেন্সে বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার ভিসার ব্যাকলগের কারণে যা এক সময় প্রায় ১ মিলিয়ন আবেদন ছিল, তা নেমে এসেছে ৭ লাখ ৫৫ হাজারে।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Govt to scale back foreign loan reliance

The government plans to scale back its dependence on foreign loans as it seeks to mitigate threats to external debt sustainability.

12h ago