মহারাজের স্পিনে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড জয়

ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড গড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। কেয়ার্ন্সে সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ৯৮ রানে হারাল তারা। ফলে ভাঙা পড়ল ৩১ বছর ধরে টিকে থাকা আগের কীর্তিটি। ১৯৯৪ সালে পার্থে অজিদের বিপক্ষে ৮২ রানে জিতেছিল সফরকারীরা।
মঙ্গলবার টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৬ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে ১৯৮ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তখনও বাকি ছিল ইনিংসে ৫৫ বল। বড় জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে টেম্বা বাভুমার দল।
ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা বাঁহাতি স্পিনার মহারাজ নেন ৫ উইকেট। ১০ ওভারের কোটা পূরণ করে একটি মেডেনসহ মাত্র ৩৩ রান দেন। ৪৯ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এই প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ নিলেন তিনি। সব মিলিয়ে এই সংস্করণের ক্রিকেটে ৫ উইকেট পাওয়া মাত্র চতুর্থ দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার তিনি। বাকিরা হলেন ইমরান তাহির (দুবার), নিকি বোয়ে ও তাবরাইজ শামসি।
প্রোটিয়ারা বড় পুঁজির ভিত পায় ওপেনারদের কল্যাণে। উদ্বোধনী জুটিতে ১০১ বলে ৯২ রান আনেন এইডেন মার্করাম ও রায়ান রিকেলটন। তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করেন অনিয়মিত স্পিনার ট্রাভিস হেড। রিকেলটন ৪৩ বলে ৩৩ রান করে ক্যাচ দেন মারনাস লাবুশানেকে।
দারুণ ব্যাটিংয়ে মার্করাম হাঁটছিলেন সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পথে। তাকে হতাশ করেন বেন ডোয়ার্শিস। ৮১ বলে নয়টি চারে ৮২ রানে উইকেটরক্ষক জশ ইংলিসের গ্লাভসবন্দি হয়ে থামেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে ৯৮ বলে ৯২ রানের আরেকটি বড় জুটি গড়েন অধিনায়ক বাভুমা ও ম্যাথু ব্রিটস্ক। দুজনই সাজঘরে ফেরেন হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করে।
আক্রমণাত্মক ঢঙে ব্রিটস্ক ৫৬ বলে সাতটি চার ও একটি ছক্কায় করেন ৫৭ রান। বাভুমা আউট হন ৭৪ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৬৫ রান করে। মাঝে এক ওভারে জোড়া শিকার ধরেন হেড। ট্রিস্টান স্টাবস ২ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। লং-অফে তার ক্যাচ নেন ক্যামেরন গ্রিন। ক্রিজে গিয়ে ছক্কা মেরে পরের বলেই থামতে হয় অভিষিক্ত ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকে। আরেকটি বড় শটের চেষ্টায় লং-অনে তিনি ধরা পড়েন অ্যালেক্স ক্যারির হাতে।
নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকায় আশা জাগিয়েও শেষমেশ তিনশ ছুঁতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ভিয়ান মুল্ডার ২৬ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ৩১ রানে। অজিদের পক্ষে হেড ৪ উইকেট নেন ৫৭ রানে। পেসার ডোয়ার্শিস ২ উইকেট পান ৫৩ রান খরচায়।
রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা হয় উড়ন্ত। ৪৩ বলে ৬০ রানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ও হেড। এই জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত অফ স্পিনার প্রেনেলান সুব্রায়েন। ২৪ বলে ২৭ রান করা হেড হন স্টাম্পড। এরপর ধস নামে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে। মহারাজের ঘূর্ণির কোনো জবাব খুঁজে পায়নি দলটি।
নবম ওভারে আক্রমণে গিয়ে প্রথম বলেই লাবুশানেকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মহারাজ। পরের ওভারে গ্রিনকে বোল্ড করে দেন তিনি। নিজের তৃতীয় ওভারে টানা দুই বলে নেন উইকেট। ইংলিস স্টাম্প হারানোর পর এলবিডব্লিউ হন ক্যারি। নিজের পঞ্চম ওভারে অ্যারন হার্ডিকেও বোল্ড করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। সেজন্য মাত্র ২৬ বল লাগে তার।
মাত্র ৮৯ রানে ৬ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া সপ্তম উইকেট জুটিতে গড়ে প্রতিরোধ। ডোয়ার্শিসকে নিয়ে ৯৫ বলে ৭১ রান যোগ করেন একপ্রান্ত আগলে থাকা অধিনায়ক মার্শ। ডোয়ার্শিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙার পর মার্শকেও ক্যাচ বানান পেসার নান্দ্রে বার্গার। অজিদের অলআউট করার বাকি কাজটা সারেন লুঙ্গি এনগিডি। ৯৬ বলে ১০টি চারে মার্শের ব্যাট থেকে আসে ৮৮ রান।
Comments