সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যুত উৎপাদন খরচ বেড়েছে: সিপিবি

ছবি: সংগৃহীত

ঋণখেলপিদের কাছ থেকে টাকা আদায়, পাচারের টাকা ফেরত আনার দৃশ্যমান ও কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে বরং খেলাপি ঋণ আদায়ে আরও ছাড় দিয়ে খেলাপিমুক্ত থাকার বিরুদ্ধে সুযোগ করে দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সভায়।

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থে এ ধরনের সুযোগ দান সাংবিধানিক ও নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। 

সভায় বলা হয়, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এ ধরনের সুযোগ দেওয়া হলেও পর্যাপ্ত টাকা পাওয়া যায় না বরং নতুন নতুন আর্থিক জালিয়াতির পথ তৈরি করা হয়। 

সভায় ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশ, টাকা উদ্ধার এবং যাদের পরামর্শে-অনুমোদনে ঋণ দেওয়া হয়েছে, তার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়। 

সাম্প্রতিক সময়ে প্রদত্ত সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, বিদ্যুতের দাম উতপাদনের খরচ অনুযায়ী দিতে হবে', 'ভর্তুকি মূল্যে বিদ্যুৎ-গ্যাস দেওয়া আর সম্ভব না'-এর তীব্র সমালোচনা করে বলা হয় যে, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। আর কতক গোষ্ঠী ও কমিশন ভোগীদের টাকা কামাইয়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এর দায় সাধারণ মানুষের ওপর চাপানো চলবে না।

সভায় বলা হয়, ভুলনীতি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অপচয় বন্ধ করতে পারলে বিদ্যুত-গ্যাসের দাম কমানো সম্ভব। এটি না করে দাম বাড়ালে শুধু মাসের খরচ নয় সেই সঙ্গে উৎপাদন ব্যয়, যাতায়াতসহ সর্বত্র খরচ বাড়বে। মূল্যবৃদ্ধিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষের আরও দুর্ভোগ বাড়বে। সভায় জ্বালানি খাতের দায় মুক্তি আইন বাতিল, রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বন্ধ, বিদ্যুৎ-গ্যাস খাতের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান হয়।

সভায় চলমান দুঃশাসনের অবসান ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম জোরদার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে বলা হয়, বর্তমান সরকার বা দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে টাকা, পেশীশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত পরিবেশে নির্বাচনের দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। সভায় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও ঋণ খেলাপি-ব্যাংক ডাকাত, অর্থ পাচারকারী, কালো টাকার মালিক, দুর্নীতিবাজদের নির্বাচেন অযোগ্য ঘোষণা, না ভোটের বিধান ও প্রতিনিধি প্রত্যাহারসহ নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য আলোচনা শুরুর দাবি জানানো হয়।
 
সভায় দুঃশাসনের অবসান, ভোট ও ভাতের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ১০ দফার বাস্তবায়নে যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। 

আজ ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ সকাল ১০টায় সিপিবি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান ও অধ্যাপক এ এন রাশেদাসহ অনেকে।
 

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

8h ago