মন আমার দেহ ঘড়ি

দোষারোপ এক ধরনের অসুস্থতা

একটি চীনা প্রবাদে আছে, যে অপরকে দোষারোপ করে, তাকে অনেক দূর যেতে হবে। যে নিজেকে দোষারোপ করে, সে অর্ধেক পথ আছে। যে কাউকে দোষারোপ করে না, সে গন্তব্যে পৌঁছে গেছে।

সাধারণত সম্পর্কে সমস্যা তৈরি হয় তখনই, যখন কেউ নিজেকে নিরাপত্তাহীন মনে করে এবং সঙ্গীর দোষকে বড় করে দেখার চেষ্টা করে। বলা হয়, কোনো বৃষ্টির ফোঁটাই মনে করে না যে সে বন্যার জন্য দায়ী। যখনই কোনো ভুল হয়, কিছু মানুষ সে বিষয়ে অপরকে দোষারোপ করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকে।

অন্যের ত্রুটি খুঁজে বের করা এবং নিজের ভুল সংশোধন না করা ব্যক্তিত্বের ব্যাধির লক্ষণ। কিছু ব্যক্তিত্বের ব্যাধিযুক্ত মানুষ তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে মোটেও প্রস্তুত থাকেন না, এমনকি তা যদি তাদের জন্যও সমস্যার কারণ হয় তবুও না।

অপরকে দোষারোপ করা একটি ক্লাসিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি হতে পারে, যা হালকা থেকে চরম পর্যায়ের হতে পারে। এই ব্যক্তিত্বের মানুষ কখনোই তাদের এমন আচরণের জন্য নিজেকে দায়ী মনে করতে পারেন না। তাদেরকে সাধারণত 'ক্রনিক ব্লেমার' হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বাস্তবে, তারা তাদের আচরণ এবং তাদের নেতিবাচক মানসিকতার মাধ্যমে অন্যদের দোষারোপ করে। তারা সহজেই নিজেদেরকে শিকার হিসেবে মনে করেন এবং তারা যে পরিস্থিতিকে ঝামেলাপূর্ণ করে তুলছেন তা মানতে রাজি হন না।

অপরকে দোষারোপের মনস্তাত্ত্বিক টার্ম হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক অভিক্ষেপ। এর ফলে মানুষের ভেতরে এমন একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়, যার মাধ্যমে অপরকে বলির পাঁঠা হিসেবে ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়।

দোষারোপ করা বা অভিযোগ করা কখনই ভালো কিছু বয়ে আনে না। কেউই নিখুঁত নয়। আমাদেরকে 'সমঝোতা'র অর্থ উপলব্ধি করতে হবে, যা নিয়ে যেতে পারে একটি অতি প্রয়োজনীয় ফলাফলের দিকে।

ডা. রুবাইউল মোর্শেদ; [email protected]

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

29m ago