খরচ মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঢালাওভাবে ঋণ নিচ্ছে সরকার

তারল্য সংকটের কারণে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করতে না পারায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে সরকার।
Government logo

তারল্য সংকটের কারণে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করতে না পারায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে সরকার।

সরকার যদি অব্যাহতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এমন ঋণ নিতে থাকে, তাহলে সামনে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার তাদের কাছ থেকে ৪৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল ৩১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া মানে নতুন ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া মূল্যস্ফীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো অর্থ বাজারে গেলে পরবর্তীতে টাকার পরিমাণ ৫ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। অর্থনীতির ভাষায় যাকে 'মানি মাল্টিপ্লায়ার' বলা হয়।

ফলে সরকার যে ৪৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, শেষ পর্যন্ত গিয়ে এর পরিমাণ ২ লাখ ২৫ হাজার ২৮৫ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এই নতুন টাকা সরবরাহের বিপরীতে তৈরি হওয়া অতিরিক্ত অর্থ পণ্যের চাহিদা তৈরি করবে, যার ফলে দ্রব্যমূল্যও বাড়বে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশে, যা নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল গত ১০ বছরের সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধ্বে এ পর্যন্ত অর্থনীতিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার সরবরাহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১-২২ অর্থবছরেও এর পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'আমদানি বিল পরিশোধের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে স্থানীয় মুদ্রা বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ ডলার কিনছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা জমা হচ্ছে।'

'ফলে ব্যাংকিং খাতে তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। সরকারি ঋণ হিসেবে অর্থনীতিতে এই নতুন অর্থের সরবরাহ শিগগির মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করবে না। কিন্তু সরকার যদি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে আগামীতে তা মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ তৈরি করতে পারে', বলেন তিনি।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে সরকারের সতর্ক থাকা উচিত। কারণ এর ফলে সামনে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে।'

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন Govt keeps borrowing heavily from BB

Comments

The Daily Star  | English

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.63 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.63 crore, which is 1,619 times the contract value.

7h ago