কাল থেকে কমতে পারে শীতের তীব্রতা

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এ ছাড়া, ২ দিনে ঢাকার তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যাওয়ায় এবার কনকনে শীতে কাঁপছে রাজধানীবাসী।

ঢাকার পাশাপাশি ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালের কিছু অংশে অস্বাভাবিক হারে তাপমাত্রা কমতে দেখা গেছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, আগামীকাল থেকে ঢাকায় শীতের তীব্রতা কমতে পারে। একইসঙ্গে দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।

তাপমাত্রা পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে ১৯টি জেলায় তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ঢাকার তাপমাত্রাও কিছুটা বেড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে—নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। নওগাঁর বদলগাছীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও যশোরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা কাটছে না। গঙ্গা অববাহিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত কুয়াশার কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। ঢাকায় ২ দিনে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস না কমে যদি ১০ দিনে কমতো তাহলে শীতে এত বেশি কষ্টদায়ক হতো না।'

'আশা করা যায়, আগামীকাল থেকে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করবে,' যোগ করেন তিনি।

গত ডিসেম্বরেও ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডিগড়, জম্মু, উত্তর রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশেও ঘন থেকে অতি ঘন কুয়াশা দেখা গেছে। চলতি জানুয়ারির শুরুতে প্রথমে মধ্যপ্রদেশের উত্তরাংশ, ছত্তিশগড় ও উপহিমালীয় পশ্চিমবঙ্গে ঘন কুয়াশা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উত্তরাখণ্ড ও ছত্রিশগড়েও ঘন কুয়াশা দেখা যায়।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, কলকাতায় গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।

কলকাতার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। গতকাল বর্ধমানের তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দার্জিলিংয়ে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে, কালিম্পংয়ে তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বজলুর রশীদ আরও বলেন, 'ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্বেন্স (পশ্চিমা লঘুচাপ) আমাদের দেশে তুলনামূলক উষ্ণ জলীয়বাষ্প নিয়ে আসে, এতে কুয়াশা কেটে যায়। এবার সেটা না হওয়ায় কুয়াশা কটছে না। ঢাকার বাইরে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়ছে। কোথাও কোথাও তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে।'

তার মতে, 'আমাদের এখানে যদি বাতাসের গতিবেগ বেশি হতো তাহলেও কুয়াশা কেটে যেত।'

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে—ইরানের পূর্বাঞ্চল ও এর আশে-পাশের এলাকায় 'পশ্চিমা লঘুচাপ' দেখা গেছে। এর প্রভাবে আগামী ৭ থেকে ১২ জানুয়ারি পশ্চিম হিমালীয় অঞ্চলে বৃষ্টি বা তুষারপাত হতে পারে।

ভূমধ্যসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির পরে তা পূর্ব দিকে এগিয়ে যায়। সাধারণত আফগানিস্তানে গিয়ে এটি অন্তত ২ ভাগে বিভক্ত হয়। এর এক ভাগ বাংলাদেশে আসে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, জানুয়ারিতে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে দেশে আরও অন্তত ২টি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে একটি মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Freedom fighter’s definition: Confusion, debate over ordinance

Liberation War adviser clarifies that Sheikh Mujib, Tajuddin, others in Mujibnagar govt are freedom fighters

15h ago