চুক্তি সংশোধন নয়, কয়লার দামে আদানির কাছে ছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ

ক্রমবর্ধমান দামের কারণে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দামে আদানি পাওয়ারের কাছে সাময়িক ছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থাটি এ তথ্য জানিয়েছে।
আহমেদাবাদে আদানি গ্রুপের কার্যালয়ের বাইরে প্রতিষ্ঠানটির লোগো দেখা যাচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স
আহমেদাবাদে আদানি গ্রুপের কার্যালয়ের বাইরে প্রতিষ্ঠানটির লোগো দেখা যাচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ক্রমবর্ধমান দামের কারণে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দামে আদানি পাওয়ারের কাছে সাময়িক ছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থাটি এ তথ্য জানিয়েছে।

বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত আদানি পাওয়ার গত ৩ ফেব্রুয়ারি একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাতে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তারা লিখেছে, 'বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানির দামে ছাড়ের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য আমাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে।'

আদানি পাওয়ারের এক মুখপাত্র গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিপিডিবির পক্ষ থেকে সাময়িক ছাড়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'কয়লার উচ্চ দামের পরিপ্রেক্ষিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে পরিবর্তনশীল জ্বালানি খরচে ছাড়ের বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য আমাদেরকে কাছে চিঠি দিয়েছে বিপিডিবি। বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।'

কিন্তু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত থেকে ৬০ মাইল দূরে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২০১৭ সালের নভেম্বরে স্বাক্ষরিত বিতর্কিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে কোনো সংশোধনের জন্য অনুরোধ করা হয়নি।

আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র ডেইলি স্টারকে তার লিখিত প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'আমরা নিশ্চিত করছি যে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে কোনো সংশোধনের জন্য বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড অনুরোধ করেনি।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই বিষয়ে অবগত এক বিপিডিবি কর্মকর্তা জানান, চুক্তিতে কোনো সংশোধন করা সম্ভব না।

তিনি বলেন, 'আমরা দেশের সব কয়লাচালিত প্ল্যান্টে কয়লার দামের ওপর ছাড় পাচ্ছি। কিন্তু আদানির সঙ্গে চুক্তিতে এমন কোনো সুযোগ নেই। এ কারণেই আমরা ছাড় চেয়েছি, আমরা আলোচনা করতে চাই।'

যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, 'চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানি কেনা হবে।'

তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি।

গত রোববার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, আদানির প্ল্যান্টের জন্য কয়লার মূল্য নির্ধারণ করা হবে নিউক্যাসল ইনডেক্স অনুযায়ী।

অস্ট্রেলিয়ায় আদানির মালিকানাধীন কারমাইকেল কয়লা খনি থেকে আমদানি করা কয়লা দিয়ে গোড্ডার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালানো হতে পারে।

নিউক্যাসল বন্দরে সাড়ে ৫ হাজার কিলোক্যালরির অস্ট্রেলিয়ান কয়লার প্রতি কেজির দাম গত ২৭ জানুয়ারি ১২৯ দশমিক ৮৭ ডলারে নেমে গেছে। পণ্য মূল্য নিয়ে কাজ করা এজেন্সি আর্গাস থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৪ হাজার ৬০০ কিলোক্যালরির কম মানের কয়লায় চলবে। তাই এর দাম আরও কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিপিডিবি কয়লার জন্য পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে, তার চেয়ে বেশি অর্থ আদানিকে দিতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন আরেক কর্মকর্তা।

বর্তমানে পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার জন্য প্রতি মেট্রিক টনে ২৪৫ ডলার, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ২৫৪ দশমিক ৩৮ ডলার এবং বরিশাল ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ২৭০ ডলার দিচ্ছে বিপিডিবি।

জানুয়ারিতে পাওয়ার সেলের অনুমান অনুযায়ী আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার দাম ছিল প্রতি মেট্রিক টন ৩৪৬ ডলার।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদানি পাওয়ারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে শর্ত রয়েছে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম বাজার মূল্যে পরিশোধ করবে বাংলাদেশ।

কিন্তু অন্যান্য চুক্তিতে দেখা যায়, কয়লার দাম আকাশচুম্বী হলেও এর সর্বোচ্চ দামের একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করা থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.63 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.63 crore, which is 1,619 times the contract value.

6h ago