কারও সঙ্গে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছি না: তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম ফুল উৎসবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, আমাদের কর্মীরা রাজপথ থেকে গড়ে উঠা কর্মী। কারও সঙ্গে পাল্টা কর্মসূচি আমরা দিচ্ছি না, আমরা আমাদের স্বাভাবিক কর্মসূচি দিচ্ছি। আমাদের এই স্বাভাবিক কর্মসূচি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-পোর্ট লিঙ্ক রোডে জেলা প্রশাসন আয়োজিত চট্টগ্রাম ফুল উৎসব উদ্বোধনের পর 'আওয়ামী লীগ পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার চেষ্টা করছে' বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগকে রাজপথে দেখলে মনে হয় ওদের (বিএনপি) গায়ে কাঁটা বিদ্ধ হয়। সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, দেশে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, রাজপথে আছে এবং রাজপথেই থাকবে। বিএনপির কর্মসূচির দিকে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি এবং শান্তি সমাবেশ করছি। কারও সঙ্গে পাল্টা কর্মসূচি আমরা দিচ্ছি না। আমাদের স্বাভাবিক কর্মসূচি আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বিএনপি ও তাদের বাইরেরও দুয়েকজন এমন কথা বলছেন। সরকারে থাকি কিংবা না থাকি, যখন ছিলাম না তখনো রাজপথে ছিলাম, এখন সরকারে আছি, ভবিষ্যতে থাকলে তখনো রাজপথে থাকব।'

এরপর চট্টগ্রাম ফুল উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ এবং সীতাকুণ্ডের ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন।

ফুল উৎসবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমাদের দেশকে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সাজাতে চান। আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে চাই। স্বপ্নের ঠিকানা হচ্ছে, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই। ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা জয় করতে সক্ষম হয়েছি। দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রেও আমরা বহু দূর এগিয়ে গেছি। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই, যে দেশ শুধু বস্তুগত দিক দিয়ে উন্নত হবে তা নয়, যে দেশ হবে একটি মানবিক দেশ এবং একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই।'

তিনি বলেন, 'পরিবেশের উন্নয়ন ঘটিয়ে আমরা এমন একটি দেশ গঠন করতে চাই, যে দেশ পৃথিবীকে পথ দেখাবে। মানবিকতায় পথ দেখাবে, সামাজিক রাষ্ট্র গঠন করে রাষ্ট্র সব দুর্গত-পীড়িত মানুষের দায়িত্ব নেবে। তেমন একটি রাষ্ট্র আমরা গঠন করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন এঁকেই প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দিবানিশি কাজ করে চলেছেন।'

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করেছেন উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ প্রায় শেষ, প্রকৃতপক্ষে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশ দিয়ে প্রথম সড়ক টানেল। এত দীর্ঘ টানেল উপমহাদেশের আর কোথাও নাই। সেটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে মেট্রোরেল করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটির ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু হয়েছে। উড়াল সড়ক হয়েছে, আরও হচ্ছে। গত ১৪ বছরে এভাবে চট্টগ্রামের অনেক উন্নয়ন সাধন হয়েছে। আরও অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'একটি শহরকে নান্দনিক করতে হলে প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। প্রকৃতির সঙ্গে যদি উন্নয়নের সমন্বয় ঘটানো না হয়, তাহলে নান্দনিকতা থাকে না, ইট-পাথর কংক্রিটে পরিণত হয় শহর, যেটি অনেক শহরে হয়েছে। চট্টগ্রামকে এখনো নান্দনিক রাখার সুযোগ রয়েছে।'

ফুল মেলার আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'সমুদ্রের পাড়ে এরকম নয়নাভিরাম একটা জায়গায় বিস্তৃত জলাশয় আছে, চারপাশে গাছপালা। এখানে স্বাভাবিকভাবে অনেক পর্যটক আসেন, পর্যটকদের জন্য এটা একটা বাড়তি পাওনা হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের জন্যও একটা বাড়তি পাওনা। আমি আশা করব, এই জায়গাটায় প্রতি বছর ৩ মাসব্যাপী পুষ্প মেলা হবে। এই মেলা শুধু চট্টগ্রাম নয়, সারাদেশের মানুষের আকর্ষণ করবে। প্রয়োজনে এখানকার জলাধারে ভাসমান ফুলের বেড করা যায়।'

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Why are we trying to make the election uncertain?

Those who are working to prevent the election should question themselves as to how the people will be empowered without one.

9h ago