রাজনীতি

‘অগ্নি সন্ত্রাসের হুকুমদাতাদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হবে’

আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেইনি। আমরা পাল্টা কর্মসূচি দিতেও চাই না। কারণ বিএনপির কতটুকু শক্তি আছে আমাদের জানা আছে,’ বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

অগ্নি সন্ত্রাসের হুকুমদাতাদের ধরতে প্রয়োজনে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

আজ শনিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেহপুর হাইস্কুল মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় থেকে আড়াই লাখ বোতল পানি, ৩০ টনের বেশি চাল, লাঠি-সোঁটা, দেশীয় অস্ত্র এবং তাজা হাতবোমা উদ্ধার করা হলো। তার মানে হচ্ছে, তাদের পরিকল্পনা ছিল ১০ তারিখে ঢাকা শহরে-পুরো বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা।'

১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ঘোষণা দিলো ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ করবে আর বেছে নিলো ৩০ হাজার মানুষ যেখানে ধরে সেখানে। উদ্দেশ্য দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। আজকেও সারা বাংলাদেশে তারা যে পদযাত্রার কথা বলছে, এটির উদ্দেশ্য হচ্ছে যারা ২০১৩-১৫ সালে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অগ্নি সন্ত্রাস করেছে; যারা এতদিন আত্ম গোপনে ছিল, লুকিয়ে ছিল, তাদের আবার গ্রামে এনে আবার অগ্নি সন্ত্রাস করানো।'

'নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা আজকে পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেইনি। সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, আমাদের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব এই দেশে চোর-ডাকাতরা যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। রাজনীতির নামে যারা অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, রাজনীতির নামে যারা মানুষের হাত-পায়ের রগ কাটে তারাও যেন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে—সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা। পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা। সরকারি দল হিসেবে সেটা আমাদের দায়িত্ব। সেই কারণে আমরা শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছি,' বলেন হাছান মাহমুদ।

'বিএনপি যেখানে পদযাত্রার ডাক দিয়েছে আমরা সেখানে কর্মসূচি দেইনি। বিএনপি ঢাকা শহরে বিভিন্ন সময় কর্মসূচির ডাক দিয়েছে, আমরা ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছি। আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেইনি। আমরা পাল্টা কর্মসূচি দিতেও চাই না। কারণ বিএনপির কতটুকু শক্তি আছে আমাদের জানা আছে,' বলেন তিনি।

বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বিএনপি পারে শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। এই দেশে রাজনীতির নামে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দিতে আমরা পারি না। আমরা দেবো না।'

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আওয়ামী লীগ রাজপথ থেকে উঠে আসা নেতৃত্ব। আমরা জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে রাজনীতি করি। বহুবার জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কিংবা শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনীতি করি না। জনগণের জন্য রাজনীতি করি।'

'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক কিংবা না থাকুক, রাজপথে সব সময় থাকবে। জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সব সময় থাকবে। আর এই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী; যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তারা আবার রাজনীতি করে! যদি ইউরোপ-আমেরিকার দেশ হতো, এই বিএনপির নেতৃত্ব, যারা অগ্নি সন্ত্রাসের অর্থদাতা-হুকুমদাতা তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকত না। এই দেশে তারা এখনো রাজনীতি করেন।'

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'অগ্নি সন্ত্রাসীদের ধরার জন্য মানুষের দাবি আছে। অগ্নি সন্ত্রাসীদের ধরার জন্য পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযান চালায়। হুকুমদাতাদের আমরা এখনো ধরিনি। হুকুমদাতাদেরও ধরতে হবে, সেই অভিযান প্রয়োজনে পরিচালনা করা হবে।'

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমরা রাজপথের দল। ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে আমরা রাজনীতি করেছি। সংগঠন শক্তিশালী ছিল, তাই ক্ষমতায় আসার পর যাদের আলস্য ধরেছে তাদের অনুরোধ জানাবো, আলস্য ঝেড়ে ফেলুন। রাজপথে নেমেছি, রাজপথে থাকব। আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে না আনা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। আগামী নির্বাচনেও বিপুল ভোটে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।'

পরাজয় সুনিশ্চিত জেনে বিএনপিকে নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আরেকটি কারণ হলো খালেদা জিয়া-তারেক রহমান নির্বাচন করতে পারবেন না। তাই নির্বাচনে গিয়ে তারা ফখরুলকে নেতা বানাতে চান না। বিএনপির পতাকা ফখরুল কিংবা অন্য কারো হাতে তুলে দিতে চান না। সেই কারণেই নির্বাচন ভীতি তাদের পেয়ে বসেছে। নির্বাচন বানচাল করার জন্য তারা অতীতে যেমন ষড়যন্ত্র করেছে, এখনো সেই ষড়যন্ত্রের পথেই বিএনপি হাঁটছে।'

Comments

The Daily Star  | English

The invisible ones

Of the over 7 crore people employed in Bangladesh, 85 percent (nearly 6 crore) are vulnerable as they work in the informal sector, which lacks basic social and legal protection, and employment benefits.

5h ago