ইবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় জেলা প্রশাসককে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে নির্যাতন ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জেলা প্রশাসককে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে আদালত আজ বৃহস্পতিবার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মোহাম্মদ মহসিনের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর পাশাপাশি নির্যাতনের ঘটনায় নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগ নেতা সানজিদা ও তাবাসসুমকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তারা।

আদেশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির সব তদন্ত প্রতিবেদন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়ের মাধ্যমে আদালতে দাখিল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদেশ অনুযায়ী, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন শিক্ষককে রাখতে বলা হয়েছে। 

৭ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির রিপোর্টও ১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গাজী মো. মোহসীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

আইনজীবী গাজী মোহসীন জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেছিলেন। 

জানা গেছে, হলে সিট না থাকায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরুর দিন দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর রুমে ওঠেন। ওই রাতে ছাত্রলীগকর্মী তাবাসসুম ডাইনিং রুমে নতুন শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান, কারা দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে থাকেন। ওই ছাত্রী হাত তুললে তাবাসসুম ক্ষুব্ধ হন। কেন তাকে এই তথ্য আগে জানানো হয়নি সেই প্রশ্ন করেন।

বিষয়টি তাবাসসুম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ওই হলের আবাসিক ছাত্রী সানজিদা চৌধুরীকে জানান।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে প্রজাপতি-২ রুমে সানজিদার সঙ্গে দেখা করতে বলা হলেও, ওই দিন তিনি দেখা করতে যাননি। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে তাকে হলের গণরুমে (দোয়েল) ডেকে নেন সানজিদা। 

সেখানে সানজিদা, তাবাসসুমসহ কয়েকজন তাকে রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নির্যাতন করেন।

যোগাযোগ করা হলে ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। কিল, ঘুষি, থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে। নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুললে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হবে এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মোহাম্মদ মোহসীন। পরে আদালত আইনজীবীকে লিখিত আবেদন করতে বলেন।

আজকের আদালতের আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি এখনো আনুষ্ঠানিক পত্র পাননি। তবে তিনি জেনেছেন। 

তিনি বলেন, 'আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।'

Comments

The Daily Star  | English
BNP's stance on president removal in Bangladesh

BNP for polls roadmap in 2 to 3 months

Unless the interim government issues a roadmap to the next election in two to three months, the BNP may take to the streets in March or April next year, say top leaders of the party.

7h ago