ইন্ট্রোভার্টদের প্রতি স্নায়ুবিজ্ঞানীর পরামর্শ

ইন্ট্রোভার্ট
প্রতীকী ছবি। রয়টার্স ফাইল ফটো

ইন্ট্রোভার্ট মানুষেরা প্রায়ই অন্যদের সঙ্গে কথা বলা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে তেমন সাবলীল নন। তেমন হয়ে থাকলে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। প্রয়োজন নেই জোর করে নিজেকে বহির্মুখী প্রমাণ করার।

সব সফল ব্যক্তিদের, বিশেষ করে ইন্ট্রোভার্টদের আছে স্পষ্টভাবে কিছু লিখে বোঝানোর ক্ষমতা।

কোথায় কাজ করছেন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যদি আপনি চিন্তাশীল ও কৌশলী হতে পারেন লেখার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগেও উন্নতি হবে। ইমেইল, পাবলিক স্পিকিং বা কোনো বিষয় নিয়ে কারো সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে।

এক্ষেত্রে আরও উন্নতি করতে পড়ে নিন হার্ভার্ড গ্র্যাজুয়েট ও নিউরোসায়েন্টিস্ট জুলিয়েট হানের পরামর্শ—

তথ্য জানাতে সঠিক ফরম্যাট বেছে নিন

কোনো পরিকল্পনা বা অনুরাধ নিয়ে যোগাযোগের আগে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য সবচেয়ে ভালো ফরম্যাটটি খুঁজে বের করুন। যেমন—জটিল তথ্য বা গবেষণাকর্ম শেয়ার করতে হলে পাওয়ারপয়েন্টে চার্ট ও ছবি দেখানো ভালো উপায় হতে পারে।

ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর ক্ষেত্রে সবিস্তারে লিখে ইমেইল পাঠিয়ে দিন।

তথ্যের প্রতি পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা ও আত্মস্থ করার সুবিধার্থে 'বুলেট পয়েন্ট' ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া 'স্টার' মার্ক ও মেথোড (Situation, task, action, result) ব্যবহার করতে পারেন।

কোনো বিষয়ের অগ্রগতি জানানোর জন্য কিংবা ফিডব্যাক সংগ্রহের জন্য সংক্ষিপ্ত মেইল করা যেতে পারে বা সরাসরি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

কঠিন পরিভাষা ত্যাগ করুন

জটিল বিষয় সহজ ও সাবলীল ভাষায় আলোচনা করা ভালো। কঠিন পরিভাষা ত্যাগ করুন। তা যতই পরিচিত শব্দ হোক না কেন।

কোনো বিষয়ের মূল জায়গায় সাবলীল থাকতে গ্রাফিকস ও অ্যানালজি ব্যবহার করতে পারেন। কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আর্থিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে শিশুদের পড়ার বইগুলো দেখতে পারেন। শিশুদের বইয়ে অনেক ছবি থাকে। এগুলো তাদের বিষয়টি বুঝতে অনেক সহায়তা করে। আপনিও সেরকম সহজ করে আপনার আর্থিক পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারেন।

শ্রোতাদের আকৃষ্ট করতে অতিরিক্ত ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দেবেন না। আলোচনায় দরকার না হলে তেমন তথ্য উল্লেখের প্রয়োজন নেই।

শ্রোতাদের বোঝার কাজ সহজ করে দিন

যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, তারা অনেকে সারাদিনই নানান জনের কাছ থেকে ইমেইল পান বা নানান তথ্য জানতে পারেন। তাই কাউকে কিছু পাঠানোর আগে মনে করে নিন—কেন যোগাযোগ করছেন?

ইমেইল ফরমেট করে নিন যাতে তা ফোনের স্ক্রিনেও সহজে পড়া যায়। এজন্য ছোট ও আকর্ষণীয় বাক্যে মেইল লিখুন।

কাজগুলোর কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন। যেমন—কোথায় কী প্রয়োজন, কীভাবে শুরু করতে হবে, ডেডলাইন কবে—ইত্যাদি।

আপনার ইমেল যদি এক পৃষ্ঠার বেশি হয়, সেক্ষেত্রে একে আলাদা ডকুমেন্ট আকারে যুক্ত করবেন। ইমেইলে হাইলাইটস বা সারসংক্ষেপ উল্লেখ করা ভালো।

সবাই সবসময় প্রেক্ষাপট নাও জানতে পারেন। তাই একেবারে প্রাথমিক কিছু তথ্য সবাইকে জানিয়ে কাজ শুরু করা যেতে পারে।

আপনার কাজ সম্পর্কে জানিয়ে দিন

আপাতদৃষ্টিতে বিতর্কিত বা বিতর্ক সৃষ্টির আশঙ্কা আছে এমন বিষয়ে অন্যদের আপনার চিন্তা ও কাজের প্রক্রিয়াগুলো জানিয়ে দিন। যেমন—বাজেট তৈরি বা প্রতিষ্ঠানের কোনো বিভাগের সংস্কার কাজ।

এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অন্যরা দেখবেন আপনি নানা দিক থেকে বিষয়টি দেখছেন ও ভাবছেন৷ আপনি তথ্যের সমন্বয় করতে পারছেন এবং বড় সিদ্ধান্তগুলো সবাইকে বোঝাতে পারছেন।

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মূল্যায়ন বা ফিডব্যাকের আমন্ত্রণ জানান। কারো কোনো পরামর্শ থাকলে তা লিখে রাখুন।

তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই

সবকিছুর পরও আপনি এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন যে, এ কাজের যোগ্যতা আপনার আছে৷

কোনো কিছু পাঠানোর আগে তাড়াহুড়ো করবেন না। বানান, ব্যাকরণ যেন ভুল না হয় তা নিশ্চিত করুন।

অপ্রয়োজনীয় ঠাট্টা ও রসিকতা করবেন না। বিশেষ করে যারা আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না, তারা তা নাও বুঝতে পারেন।

শব্দ ও বাক্যসংখ্যা এমনকি সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটি যতটা পারবেন সংক্ষেপ করে প্রকাশ করুন। এরপর নিজেকেই বারবার প্রশ্ন করুন—আমার পরিকল্পনা বা বিশ্লেষণ ঠিক আছে কি?

যোগাযোগের ক্ষেত্রে একেকটি শব্দকে একেকটি মূল্যবান 'মুদ্রা' বলে গণ্য করুন।

সিএনবিসি অবলম্বনে গ্রন্থনা করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়

Comments

The Daily Star  | English
China urges US for fair trade talks

China warns countries against striking trade deals with US at its expense

Beijing "will take countermeasures in a resolute and reciprocal manner" if any country sought such deals, a ministry spokesperson said

38m ago