বেসমেন্টের বাণিজ্যিক ব্যবহার আবাসিক বাসিন্দাদের জন্য বড় হুমকি

স্টার ফাইল ছবি

অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে যেসব ভবন মালিক তাদের বেসমেন্টগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছেন, তারা কেবল গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা ছোট করে আনছেন না, ভবনের বাসিন্দাদেরও বড় ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বাতাস চলাচল করতে পারে না এমন ধরনের বেসমেন্ট অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারীর ভাষ্য, 'কেউ যদি বাণিজ্যিক কাজে বেসমেন্ট ব্যবহার করতে চায়, তাহলে তা ঝুঁকিমুক্ত রাখার জন্য অবশ্যই সেখানে উপযুক্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।'

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন ঢাকার ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার ভবনগুলোর মধ্যে কতগুলো অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করছে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য রাজউকের কাছে নেই। এমনকি এ ধরনের অনিয়মের জন্য এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।

২০১৯ সালে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর সে বছরের এপ্রিলে ঢাকার ১০ তলার উপরের ভবনগুলোর ওপর একটি মাঠ পর্যায়ের জরিপ চালায় রাজউক।

জরিপে দেখা যায়, এগুলোর মধ্যে রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই ৪৭৫টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি ১ হাজার ৩৪৩টি ভবন অনুমোদিত নকশার বাইরে উপরের দিকে কিংবা পাশে বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজউকের এক কর্মকর্তা জানান, জরিপ দলটি ২ লাখ ৪ হাজার ১০৬টি ভবনের মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৫টি ভবনে ত্রুটি খুঁজে পায়।

গত মঙ্গলবার সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের পর রাজউকের আওতাধীন ৮টি জোনের প্রতিটিতে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস জানান, কমিটিগুলো নিজ নিজ এলাকায় ভবনের বেসমেন্টে মার্কেট বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি খুঁজে বের করবে এবং এ ধরনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ও বৈধতা যাচাই করবে।

তন্ময় দাস বলেন, 'ভবনের মালিক যদি  বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন তাহলে আমরা তাদের আরও ৭ দিন সময় দেবো। সব কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর কোনো ব্যত্যয় থাকলে সেই ভবনগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এ ব্যাপারে আজ শনিবার ওসমানী মিলনায়তনে রাজউকের নগর উন্নয়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তন্ময়। এতে সভাপতিত্ব করবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।

তন্ময় বলেন, 'কমিটির সিদ্ধান্তের পর আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবো।'

এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, 'বেসমেন্টে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ধরনের ভবনের সংখ্যা অনেক বেশি।'

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আদিল মুহাম্মদ খানের ভাষ্য, বিষয়টি জানা সত্ত্বেও রাজউক নিষ্ক্রিয় আছে।

তিনি বলেন, 'রাজউকের উচিত ছিল নিয়মিত পরিদর্শনের সময় আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি খুঁজে বের করা এবং সে অনুযায়ী নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়া।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh continues to perform poorly in budget transparency

Bangladesh has continued to showcase a weak performance in the open budget rankings among its South Asian peers, reflecting a lack of transparency and accountability in the formulation and implementation of fiscal measures.

15h ago