সোনাইমুড়ীতে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০

ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষের পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছবি: স্টার

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।  

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

স্থানীয়রা জানান, সোনাইমুড়ীতে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমানে দুটি কমিটি রয়েছে। তারা আলাদা আলাদাভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। পুরনো কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সুজন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল উদ্দিন। গত বছর জুনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেন। ওই দিনই নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন একটি কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটিতে আরিফ হোসেনকে সভাপতি ও রাসেল মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

ছাত্রলীগের বিবদমান অপর গ্রুপের সভাপতি সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলা ছাত্রলীগ টাকা নিয়ে এই কমিটি দিয়েছে। যেহেতু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নোয়াখালী জেলা কমিটি ভেঙে দিয়েছে, সেক্ষেত্রে জেলা ছাত্রলীগ এই কমিটি দিতে পারে না। এরপরও আরিফ-রাসেলের নতুন এই কমিটিকে কেন্দ্রীয় কমিটি বৈধ ঘোষণা করেছে বলে দাবি করেন তারা।'

এই বৈধতার আলোকে উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি আজ বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলার সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের ও সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাবু এবং জেলা পরিষদের সদস্য মাহফুজুর রহমান ভিপি বাহার প্রমুখ। সেখানে ভিডিও কনফারেন্সে নতুন উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা বৈধ ঘোষণা করে বক্তব্য রাখার কথা ছিল। এমন খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটির সভাপতি সুজন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল তাদের অনুসারীদের নিয়ে সভাস্থলে গিয়ে সভা পণ্ড করে দেন। সেসময় ২ গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।  

এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংঘর্ষ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আমাদের ৩-৪ জন নেতাকর্মী আহত আছেন।'

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'জামায়াত-শিবির থেকে আগতরা আজ ছাত্রলীগের নামে সভা করতে চেয়েছিল। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিষয়টি টের পেয়ে সভা বন্ধ করে দেয়।'

পরে দেওয়া কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।  

সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আমাদের কার্যক্রম করছি। প্রতিপক্ষ নেতারা বিবাহিত ও তাদের সন্তান আছে। তারা ৮-১০ বছর আগের কমিটির নেতা ছিলেন। জেলা ছাত্রলীগ তাদের কমিটি বিলুপ্ত করে গত বছর সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করে।'

অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, 'বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ নেতারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এসময় আমাদের ৩-৪ জন আহত হন।'   

সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে কেন্দ্র একটি কমিটি দিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছিল। আজকের সভায় ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় কমিটি সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে বৈধ কমিটি হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। উপজেলা ছাত্রলীগের বিবদমান অপর গ্রুপ বলছে, তারা এ সভা করতে দেবে না।'

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক ডেইলি স্টারকে জানান, ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের মারামারির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তিনি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় রাত ৯টা পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।    

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Why are we trying to make the election uncertain?

Those who are working to prevent the election should question themselves as to how the people will be empowered without one.

12h ago