পায়রা বন্দর: ক্যাপিটাল ড্রেজিং সম্পন্ন, জেটিতে পণ্য খালাস করতে পারবে মাদার ভেসেল

পায়রা বন্দর
পটুয়াখালীর পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের ফলে ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার চ্যানেল সৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের অন্য সব বন্দরের চেয়ে বেশি গভীর। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হওয়ায় পায়রা বন্দরের জেটিতে পণ্য খালাস করতে পারবে মাদার ভেসেল। ড্রেজিংয়ের ফলে ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার চ্যানেল সৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের অন্য সব বন্দরের চেয়ে বেশি গভীর।

আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে এ বন্দরে জাহাজ ভিড়বে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

শিগগির ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬০ হাজার টন কয়লা নিয়ে একটি বড় জাহাজ বন্দরে আসার কথা আছে।

বেলজিয়ামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান 'জান ডি নুল' গতকাল রোববার বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে খননকৃত চ্যানেল বুঝিয়ে দেয়। গভীরতম এ চ্যানেল দিয়ে লাইটার জাহাজের সাহায্য ছাড়াই বন্দরের জেটিতে সরাসরি পণ্য খালাস করতে পারবে মাদার ভেসেল।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ২২৫ মিটার দীর্ঘ ও ৩০ মিটার প্রস্থের এবং সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফটের ৬০ হাজার টন কার্গো বা ৩ হাজার কনটেইনারবাহী জাহাজ লোড-আনলোড করতে পারবে দেশের এ তৃতীয় সমুদ্র বন্দরটিতে।

পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল জানান, এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গভীরতম সমুদ্র বন্দর হওয়ায় ইতোমধ্যেই দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

পায়রা বন্দর
পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

খননকৃত চ্যানেল হস্তান্তরের সময় চেয়ারম্যান বলেন, 'রামনাবাদ চ্যানেলে বন্দরের প্রথম জেটির কাজ শেষ হলেই আগামী মে মাসে বন্দরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হবে। তবে প্রথম টার্মিনালটি প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে আগত জাহাজগুলো নোঙ্গর করে পণ্য লোড-আনলোড করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'বন্দরের প্রথম টার্মিনালে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দিনরাত কাজ চলছে। রামনাবাদ চ্যানেলের চারিপাড়ায় নির্মিত এ টার্মিনালে একই সঙ্গে ২০০ মিটারের ৩টি মাদার ভেসেল ভিড়ানোর সক্ষমতা থাকছে। ৬৫০ মিটার দীর্ঘ মূল টার্মিনাল এবং ৩ লাখ ২৫ হাজার বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড, ১০ হাজার বর্গমিটার সিএফএস সুবিধা থাকছে।'

চেয়ারম্যান জানান, সড়কপথে পণ্য পরিবহনের জন্য টার্মিনালের সঙ্গে ৬ লেনের ৬ দশমিক ৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের কাজ চলছে। এছাড়া আন্ধারমানিক নদীতে ১ দশমিক ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪ লেন সেতুর নির্মাণ কাজও শুরু হচ্ছে।

প্রথম টার্মিনাল, ৬ লেন সড়ক ও ৪ লেন সেতু নির্মাণসহ এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত পায়রা বন্দরে দেশি-বিদেশি প্রায় ১ হাজার ৪০০ জাহাজ পণ্য খালাস করেছে (জাহাজ থেকে জাহাজে)। যার মধ্যে বিদেশি ২৯৬টি পণ্যবাহী জাহাজ বহির্নোঙ্গরে মালামাল খালাস করে। এর মধ্যে ২১৬টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের। এর থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। আগামী বছর এ বন্দরের রাজস্ব আয় ৮-১০ গুণ বৃদ্ধি পাবে।

Comments

The Daily Star  | English

A transitional budget for troubled times

Govt signals people-centric priorities but faces tough trade-offs

2h ago