সুলতানাকে আটক-জিজ্ঞাসাবাদে আইনি ব্যত্যয় ঘটেছে: আসক
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে আসক জানায়, নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে থাকাকালে সুলতানা জেসমিন নামে এক সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকের বক্তব্য এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, তাকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সংবিধান, বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটেছে।
আসক জানায়, বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে ২২ মার্চ সকালে র্যাব প্রতারণার অভিযোগে আটক করে। পরে জানা যায়, ২৩ মার্চ বিকেলে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে। গণমাধ্যম থেকে আরও জানা যায়, তার এ আটকের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশকে র্যাব কোনো তথ্য জানায়নি। র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটকের পরপর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে নওগাঁ হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে ২৪ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার দাবি করলেও র্যাব তা অস্বীকার করেছে। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির সময় জেসমিনের মাথার ডান পাশে আঘাত ছিল। ব্রেনের ভেতর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে সিটিস্ক্যান রিপোর্টে উঠে আসে।
আসক মনে করে, পরিবারের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তবে এবারই প্রথম এমন অভিযোগ উঠছে তা নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। অভিযোগগুলো যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। পূর্বের ঘটনাগুলোর আইনগত প্রতিকার না পাওয়ার মধ্যদিয়ে বিচার না হওয়ার যে অপচর্চা বিদ্যমান রয়েছে, তা দূর করা অতি জরুরি।
তাই দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে এ অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে আসক।
Comments