ছাত্রীকে বাবা-ভাই থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ধর্ষণের ‘নাটক’ সাজান শিক্ষক: পুলিশ

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ফরিদপুরের মধুখালীতে বাবা-ভাইয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা মিথ্যা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, ওই ছাত্রীকে তার বাবা-ভাইয়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ধর্ষণের এই 'নাটক' সাজান স্কুলটিরই এক শিক্ষক।

আজ সোমবার দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান এসপি মো. শাহজাহান।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম ইসরাত জাহান লিপি (৪৪)। তিনি মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। থাকেন ফরিদপুর শহরে।

এসপির ভাষ্য, ৩ মাস আগে ওই শিশুটি আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। জন্মের সময় শিশুটি তার মাকে হারায়। নিঃসন্তান লিপি তাকে খুব আদর করতেন। মাঝে মাঝে তিনি শিশুটিকে নিজের কাছে এনে রাখতেন। বিষয়টি শিশুটির বাবা ও ভাই মেনে নিতে পারেনি।

মো. শাহজাহান বলেন, 'গত ১৭ মার্চ শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে লিপি শিশুটির বাবা ইয়ামিন মৃধা রাজু (৪০) ও ভাইকে স্কুলে ডেকে আনেন। এরপর এক নারীসহ স্থানীয় কিছু ব্যাক্তি বাবা-ছেলেকে স্কুলের একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করেন।'

এ ঘটনায় ২০ মার্চ ওই শিশুটির বাবাকে দিয়ে ২টি মামলা করানো হয় বলে জানান এসপি। একটি মামলা বাবা-ছেলেকে মারপিটের অভিযোগে, অন্যটি ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, 'ওই শিশু প্রথমে বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে এবং পরে বাবাকে বাদ দিয়ে কেবল ভাইয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনে। মামলা হওয়ার পর শিশুটির মেডিকেল পরীক্ষা করানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে শিশুটি জানায় যে, তাকে কেউ ধর্ষণ করেনি। পরে আদালতেও সে একই কথা বলে।'

এসপির ভাষ্য, 'শিশুটিকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এ নাটক সাজান লিপি।' এখন তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

শিশুটির বাবা ইয়ামিন মৃধা রাজু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিঃসন্তান লিপি আমার মেয়েকে লোভ দেখিয়ে তার কাছে নিয়ে রাখতে চান। অনেকদিন ধরে এ চেষ্টা করে আসছেন তিনি। এর আগেও তিনি আমার মেয়েকে না জানিয়ে তার বাসায় নিয়ে গেছেন।'

এ অভিযোগের বিষয়ে লিপি বলেন, 'শিশুটি একাই মধুখালী থেকে আমার বাসায় চলে আসত। আমি তাকে কিছু শিখিয়ে দেইনি। শিশুটির বাবা-ভাইকে কারা মেরেছে তা আমি জানি না।'

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, শিশুটির বাবা-ভাইকে মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন জামিনে আছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Seven killed in Mymensingh road crash

At least seven people were killed and several others injured in a head-on collision between a bus and a human haulier in Mymensingh’s Phulpur upazila last night

1d ago