কুড়িগ্রাম

শিক্ষককে তুলে নিয়ে পেটানো আ. লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবি

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় শিক্ষককে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েও খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিসিটিভি ফুটেজে শিক্ষককে আওয়ামী লীগ নেতার পেটানোর দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় শিক্ষককে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েও খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে রোকন ও তার সহযোগী আসাদুল ইসলামকে (৪৭) দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

অভিযুক্ত রোকনুজ্জামান রোকনকে (৪০) রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।

রোকনের বাড়ি রৌমারী উপজেলার পাখিউড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আজমত আলী। তিনি পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার সহযোগী রৌমারী উপজেলার ফুলকারচর গ্রামের আকায়েত উল্লার ছেলে। 

মারধরের শিকার স্কুলশিক্ষক নুরুন্নবী হক (৪১) রৌমারী উপচেলার চর শৌলমারী গ্রামের মোংলা মিয়ার ছেলে। তিনি রৌমারী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

পুলিশ জানিয়েছে, বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপরে রৌমারী উপজেলা চত্বর থেকে স্কুলশিক্ষক নুরুন্নবীকে জোর করে তুলে নিয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান ও তার লোকজন। রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রার অফিস কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়। সেখানে কয়েকজনের উপস্থিতিতে স্কুলশিক্ষক নুরুন্নবীকে মারধর করেন রোকনুজ্জামান। মারধরের ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়। 

পুলিশ আরও জানায়, আহত স্কুলশিক্ষক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও তার সহযোগী আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

হামলার শিকার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও তার সহযোগী আসাদুল ইসলাম তাদের পছন্দের শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন '

তিনি বলেন, 'আমাকে প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে রোকনুজ্জামান আমাকে বেদম মারধর করেছেন। আমাকে প্রথমে একটি বাস কাউন্টারে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে আওয়ামী লীগ সম্পাদকের অফিস রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।'
 
রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোকনুজ্জামান একজন শিক্ষককে মারধর করে চরম অন্যায় করেছেন। মারধরের ঘটনাটি তার অফিসের সিসি ক্যামেরায় ধারণ হয়েছে। রোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রূপ কুমার সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযুক্ত আওয়ীমী লীগ নেতা ও তার সহযোগী এ ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের অভিযান চলছে।'

Comments