ফিফা অনুর্ধ্ব-২০ ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২৩

ইসরায়েলকে খেলতে দিতে অস্বীকৃতি, আয়োজনের অধিকার হারাল ইন্দোনেশিয়া

ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফেডারেশনের বাইরে অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের পোস্টার। ছবি: রয়টার্স
ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফেডারেশনের বাইরে অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের পোস্টার। ছবি: রয়টার্স

এ বছরে অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার হারাল ইন্দোনেশিয়া। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা আজ এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার ১ কর্মকর্তা প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে আপত্তি জানানোয় এ সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা।

এক বিবৃতিতে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, 'বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ২০২৩ এর আয়োজক হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার নাম বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব নতুন আয়োজক দেশের নাম ঘোষণা করা হবে। প্রতিযোগিতার সময়সূচীতে আপাতত কোনো পরিবর্তন আসছে না'।

বিবৃতিতে সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি ফিফা।

তবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (পিএসএসআই) বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।

২০ মে থেকে ১১ জুনের মাঝে ইন্দোনেশিয়ার ৬টি শহরে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতায় ২৪টি আন্তর্জাতিক যুবদলের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এবারই প্রথম অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করে ইসরায়েল।

পিএসএসআইর নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিয়া সিনুলিনগা সিএনএনকে বৃহস্পতিবার জানান, ইন্দোনেশিয়ার ১ আঞ্চলিক নেতা 'ইসরায়েল অংশ নিলে' এ প্রতিযোগিতার খেলা আয়োজনে অস্বীকৃতি জানানোর কারণেই মূলত ফিফা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অবকাশ যাপনকেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত বালি দ্বীপের গভর্নর ওয়েইয়ান কোসতার ইন্দোনেশিয়ার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়ে এ প্রদেশে ইসরায়েলের খেলায় অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ জানান। 

ফিফা অনুর্ধ্ব-২০ ফুটবল বিশ্বকাপের ট্রফি। ছবি: ফিফার ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত
ফিফা অনুর্ধ্ব-২০ ফুটবল বিশ্বকাপের ট্রফি। ছবি: ফিফার ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

'বালির গভর্নর তার চিঠিতে আরও জানান, বালির প্রাদেশিক সরকার ইসরায়েলের অংশগ্রহণে কোনো খেলা আয়োজনে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে', যোগ করেন আরিয়া।

এ বিষয়ে সিএনএন বালির গভর্নরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ সপ্তাহে বালিতে যুব বিশ্বকাপের ড্র আয়োজনের কথা ছিল, কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে এ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।

অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়া ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ধাপ ছিল এবং এই সম্মান হারানোতে ফুটবল বিশ্বে দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ২৭ কোটি মানুষের দেশটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীকে সমর্থন করে।

ইন্দোনেশিয়ার রক্ষণশীল মুসলিমদের মাঝে ইসরায়েল-বিরোধী মনোভাব প্রকট। এ মাসের শুরুর দিকে রাজধানী জাকার্তায় ইসরায়েলকে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভে অংশ নয় অসংখ্য মানুষ।

সোমবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো 'জোকোউই' উইদোদো টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং একইসঙ্গে জানান, দেশটিকে ফিফার নীতিমালা মেনে চলতে হবে।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, 'খেলার সঙ্গে রাজনীতিকে জড়াবেন না'।

পিএসএসআই সভাপতি এরিক থোহির জানান, তিনি ইন্দোনেশিয়ার বিষয়টি নিয়ে ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফানতিনোর সঙ্গে আলোচনা করেন।

থোহির এক বিবৃতিতে জানান, 'আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছি। আমাদেরকে ফিফার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে, কারণ আমরা সংস্থাটির সদস্য এবং তারা মনে করে চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে না। আমাদেরকে মেনে নিতেই হবে'।

ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা আরিয়া আরও জানান, দেশটির ফুটবল সম্প্রদায় ফিফার এ সিদ্ধান্তে 'চরম হতাশাগ্রস্ত' এবং কর্মকর্তারা আরও বিধিনিষেধ আরোপ না করার জন্য ফিফার কাছে তদবির করছেন।

তিনি বলেন, 'সর্বোচ্চ বিধিনিষেধ হতে পারে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দলের নিষিদ্ধ হওয়া এবং দেশটির ফুটবল লীগের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেওয়া'।

ফিফার বিবৃতিতে জানানো হয়, 'খুব শিগগির ফিফার সভাপতি ও পিএসএসআইর সভাপতি পরবর্তী আলোচনার জন্য বৈঠকে বসবেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

7h ago