‘বিএনপি বায়াসড তত্ত্বাবধায়ক চায়, যারা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার গ্যারান্টি দেবে’

বর্তমানে বিশ্বে পাকিস্তান গণতন্ত্রের জন্য ভালো উদাহরণ নয়। সেই পাকিস্তানেই একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানী সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপি একটি বায়াসড তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়; যে সরকার তাদের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার গ্যারান্টি দেবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানী সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, '৩ মাসের কথা বলে ২ বছর যারা ক্ষমতাসীন ছিল, এ রকম তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের মানুষ চায়নি। এ ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাদের কাম্য ছিল না।'

তিনি আরও বলেন, 'এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার তখন শপথ নিয়েই বঙ্গ ভবন থেকে না আসার আগেই ১৩ জন সচিবকে বরখাস্ত করেছে। শুধু এটা নয়, তারা আরও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পরের দিন থেকে বাংলাদেশে একটা ত্রাস সঞ্চার করা হয় এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে নিরাপত্তা বাহিনী হামলা চালায়। নির্বাচনের আগেই তারা একটা পক্ষ নেয় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে একটা পার্টিজান সরকার সেটি তারা স্পষ্ট করে তোলে। এটার বিরুদ্ধে তখন আরও অনেক ব্যাপারও ছিল, যেটা আমাদের দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে চরিত্র ও বৈশিষ্ট তখন ছিল সেটার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছিল তৎকালীন পক্ষপাতদুষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার।'

'আজকের আমাদের দেশের অপজিশন বিএনপি আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাচ্ছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলতে ২০০১ সাল এবং এক-এগারোর ২০০৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছে সেটাই আমাদের কাছে মনে হয়। তারা একটি বায়াসড তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়; যে সরকার তাদের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার গ্যারান্টি দেবে ও তাদের বিজয়ী করার জন্য যা যা মেকানিজম করার, যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার এবং নির্বাচনকে তাদের বিজয়ের গ্যারান্টি হিসেবে প্রক্রিয়াগতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া...সেটাই তাদের উদ্দেশ্য,' বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি আরও বলেন, 'এ রকম বায়াসড তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা চাই না। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল করা হয়ে গেছে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করার; একটা ডেড ইস্যুতে জীবিত করার উদ্যোগ কোথাও সম্ভব হয় না। আজকে আফ্রিকান দেশগুলোতে, যেখানে অনেক দেশে গণতন্ত্রের অনেক সংকট তারপরও কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক নামের সরকার কোনো দেশে থাকে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমরা আওয়ামী লীগ থেকে বলেছি, আমরা সেভাবেই নির্বাচন চাই। বর্তমানে বিশ্বে পাকিস্তান গণতন্ত্রের জন্য ভালো উদাহরণ নয়। সেই পাকিস্তানেই একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে।

'আমরা মনে করি, আমাদের সংবিধান আছে এবং সংবিধান অনুযায়ী আমাদের দেশে নির্বাচন হবে। দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো আমাদের চলমান সরকার থাকবে কিন্তু তারা কোনো মেজর পলিসি ডিসিশন নিতে পারবে না। তারা রুটিন ওয়ার্ক করবে। নির্বাচন হবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেভাবে হয়,' যোগ করেন তিনি।

নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেক গণতান্ত্রিক, যেটা অতীতে কখনো ছিল না এবং শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশন অনেক স্বাধীন উল্লেখ করে কাদের বলেন, 'আমরা মনে করি বিষয়টি ভবিষ্যতে সময়ের বিবর্তনে আরও ম্যাচিউরড হবে। আরও পারফেক্ট হবে, ত্রুটিমুক্ত হবে। এখন এই মুহূর্তে যেটুকু আছে সেটা একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করতে বিএনপির অসুবিধা কোথায় এটাই আমাদের বোধগম্য নয়।'

Comments