চট্টগ্রামে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং, প্রস্তুত ২৮৪ মেডিকেল টিম

ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কীকরণ ও মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বন্দরনগরীর আকমল আলী ঘাট এলাকায় মাইকিং। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখায় চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন বাঁচাতে প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। পুরো জেলায় মোট ২৮৪ মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরকে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলার পর, জেলা প্রশাসন মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়। 

ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে বৃহস্পতিবার থেকেই উপকূলীয় এলাকায় প্রচারণা চলছিল। মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোকজনকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বলা হয়।

শুক্রবার বিকেলে বন্দরনগরীর হালিশহরের আকমল আলী রোড এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা তদারকি করতে দেখা যায় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও সাইক্লোন প্রস্তুতি সেলের ফোকাল পারসন হুসেইন মুহাম্মদকে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু আবহাওয়া অফিস থেকে শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরকে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, মানুষকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর শুরু করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি।'

হুসেইন মুহাম্মদ আরও বলেন, 'জেলায় মোট ১ হাজার ১৭০টি স্থায়ী ও অস্থায়ী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৫ লাখের বেশি মানুষ এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে।'

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান ডেইলি স্টারকে জানান, সাইক্লোন প্রিপার্ডনেস প্রোগ্রামের (সিপিপি) ৮ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক সচেতনতামূলক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন এবং লোকজনকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ করছেন।

এছাড়া, পর্যাপ্ত চাল, শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন বরাদ্দ রাখা হয়েছে জানিয়ে রাকিব বলেন, 'সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।'

তবে জেলার বিভিন্ন উপকূলীয় উপজেলার বাসিন্দারা জানান, তারা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারণা দেখতে পাননি।

যোগাযোগ করা হলে সন্দ্বীপ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাফর উল্লাহ টিটু ডেইলি স্টারকে জানান, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পৌরসভা এলাকায় কোনো প্রচারণা দেখা যায়নি। 

একই কথা বলেন সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, 'শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করার কোনো প্রচারণা ছিল না।'

জানতে চাইলে সন্দ্বীপের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরকে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য প্রচারণা শুরু হবে।'

তিনি বলেন, 'উপজেলার দেড় লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মোট ১৬২টি সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার খোলা হয়েছে। ১ লাখের বেশি মানুষকে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হবে।'

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার ১৫টি উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে মোট ২৮৪টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং বন্দর নগরীর ৯টি আরবান ডিসপেনসারি মহানগর এলাকায় চিকিৎসা দিতে  প্রস্তুত আছে।'

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) বন্দরে নিজস্ব সতর্কতা সংকেত-২ জারি করেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক ডেইলি স্টারকে জানান, বন্দরে নোঙর করা সব জাহাজকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে বন্দরকে ৫ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হলে সব জাহাজকে বহির্নোঙ্গরে যেতে বলা হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

2h ago