মজিলা ফায়ারফক্সের লোগোতে ফক্স নয়, পান্ডার ছবি

যারা কম্পিউটারে কাজ করেন, তাদের কাছে অন্যতম পরিচিত ইন্টারনেট ব্রাউজারগুলোর একটি হচ্ছে মজিলা ফায়ারফক্স। আর ফায়ারফক্সের লোগোতে থাকা নীল বৃত্তকে পেঁচিয়ে ধরা প্রাণীটাও বেশ পরিচিত। ফক্স শব্দটা থেকেই ধরা নেওয়া হয়, প্রাণীটি আমাদের পরিচিত বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো, মাঝে মাঝে অন্ধকার থেকে উঁকি মেরে ভয় দেখানো এবং ঈশপের গল্পের অতি চতুর চরিত্র– শেয়াল। 

কিন্তু রহস্যটা এখানেই। ওটা শেয়াল নয়, লাল পান্ডা বা পোশাকি নাম 'ফায়ারফক্স'। নামে পান্ডা হলেও ফায়ারফক্সের স্বভাবচরিত্র বেশ কয়েকটি প্রাণীর মিশেলে তৈরি।

নিওস্মার্ট টেকনোলজির তথ্যমতে, ফায়ারফক্স দেখতে র‍্যাকুনের মতো, খাওয়া-দাওয়ায় পেয়েছে পান্ডার স্বভাব কিন্তু বংশ পরম্পরায় এদের কারও সঙ্গেই নাকি এর সম্পর্ক নেই। লালচে বাদামি রঙা শরীরের চঞ্চল প্রজাতির এই ছোট আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণীটির দেখা মেলে হিমালয়ের পূর্বাঞ্চল এবং চীনের দক্ষিণাংশে।

মজিলা ফায়ারফক্সের লোগো বছরের পর বছর ধরে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এসেছে। এতে প্রথম ফায়ারফক্সের সংযোজন ঘটে ২০০৪ সালে। এর কিছুদিন আগেই ব্রাউজারটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল। নীল বৃত্তটি আদতে সমগ্র পৃথিবীকে উপস্থাপন করে এবং এতে জড়িয়ে থাকা ফায়ারফক্সের দেহটি ব্রাউজারের নিজস্ব প্রতীক। এতে যে অর্থটা দাঁড়াচ্ছে, তা হলো ব্রাউজারটি নিজের বিস্তৃতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সংকল্পবদ্ধ। অন্যদিকে ফায়ারফক্সের রঙ ও আকৃতিটা এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা কি না অনেকটা আগুনের লেলিহান শিখার মতো দেখায়। প্রতিপত্তি ও শক্তিমত্তায় বিভিন্ন সময় আগুনকে প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়, এখানেও তাই। আর নামের সঙ্গে মেলানোর জন্যই যে লোগোতে এই প্রাণীটির আবির্ভাব, তাতে সন্দেহ নেই। এই লোগোটিতে প্রথম বছর থেকে এখনো পর্যন্ত বেশ কিছু সূক্ষ্ম পরিবর্তন করা হয়েছে। রঙ আরও উন্নত হয়েছে, ঔজ্জ্বল্য বেড়েছে– ত্রিমাত্রিক ভাবটা আরেকটু ধারালো হয়েছে, ফায়ারফক্সের লেজটিকে ধীরে ধীরে আরও বেশি অগ্নিশিখার মতো করে তোলা হয়েছে। 

এই লোগোতে সবশেষ পরিবর্তন ঘটেছে ২০১৯ সালে। গ্লোবের আকার উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হয়ে এসেছে এবং ফায়ারফক্স আরও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে পৃথিবীকে। ফায়ারফক্সের নিজস্ব আকার আরও বড় করা হয়েছে। আর সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তনটি হচ্ছে, আগের মতো অমসৃণ ও বাস্তব চেহারা না রেখে লোগোর নকশাটি অনেক বেশি মসৃণ হয়ে গেছে। পৃথিবীর রংও আর নীল নেই, অনেকটা বেগুনিঘেঁষা। সেকেলে ভাব থেকে সরে এসে অধুনা কৃত্রিমতা আর নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তিকে আরেকটু বেশি প্রকাশ করতেই হয়তো লোগোর এই বিবর্তিত রূপ। 

তথ্যসূত্র: ফ্যাক্টজিপিডিয়া, টার্বোলোগো, ওয়ার্ল্ডওয়াইল্ডলাইফ

Comments

The Daily Star  | English

Govt divides tax authority in IMF-backed reform

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

1h ago