‘বর্তমান সরকার থাকলে কখনোই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য-অবাধ-সুষ্ঠু হতে পারে না’

ফখরুল
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বর্তমান সরকার থাকলে কখনোই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য-অবাধ-সুষ্ঠু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'এত দিন বলে এসেছে উন্নয়ন হবে, উন্নয়ন হচ্ছে, উন্নয়ন নাকি আমাদের চোখে পড়ে না। আমরা নাকি চোখে ঠুলি দিয়েছি। সেই উন্নয়ন এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে? আজকে পরিষ্কার করে অর্থনৈতিক সংগঠনগুলো বলছে, এখন যে সময় যাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য এত খারাপ সময় অর্থনীতিতে আর কখনো আসেনি।'

'পত্রিকায় এসেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক রেমিট্যান্স আসছে। এই ৫০-৫২ বছরে এটা বিস্ময়কর ব্যাপার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যারা যায়, যারা কাজ করে, তারা দেশে ফিরে এসে বিনিয়োগ করে না। তারা সেখানেই থাকে, দরকার হলে এখানকার বাড়ি-ঘর বিক্রি করে চলে যায়। এটাই আমরা দেখে আসছি। এখন রেমিট্যান্স ফিরে আসছে, কেন? যারা চুরি করেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে, ব্যাংকগুলো যারা খালি করে দিয়েছে তারা যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন জায়গায় অর্থ জমা করেছিল এখন তারা দেখছে সেগুলো আর নিরাপদ নয়,' বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি আরও বলেন, 'এখন বিচার বিভাগ, তাদের বিভিন্ন সরকারি সংস্থাগুলো খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে, সেগুলো আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে। তাতে লাভ কী? আড়াই পারসেন্ট ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। যারা চুরি করা-পাচার করা টাকা ফেরত আনবে তাদের ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। কী চমৎকার! চুরি করবে, পাচার করবে, বাইরে নিয়ে যাবে, আবার দেশে ফিরিয়ে আনলে আমার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আড়াই পারসেন্ট ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। এ রকম একটা সরকার চিন্তাও করা যায় না।'

ফখরুল বলেন, 'আজকে সারা বিশ্ব এ কথাটা স্বীকার করে নিয়েছে যে, বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার কোনো জায়গা নেই। এখন বাংলাদেশ পুরোপুরিভাবে একটা কর্তৃত্ববাদী শাসকদের হাতে পড়ে গণতন্ত্রের যে মূল স্তম্ভ; সেই ফ্রিডম অব প্রেস—ফ্রি মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে তাদের প্রয়োজনে।'

'এই কথা এখন আর আমাদের বলতে হয় না। এখন সারা বিশ্বে যারা মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করেন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, মানুষের ভিন্ন মত পোষণ করার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন তারা সবাই এক বাক্যে এই কথা বলছেন যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মুক্ত সাংবাদিকতা নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই, ভিন্ন মত সহ্য করার মতো এখানকার শাসক গোষ্ঠীর কোনো রকমের মানসিকতা নেই। তারা তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য এখানে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে তীব্রভাবে বল প্রয়োগ করে মানুষের ভিন্ন মত পোষণ করার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে। ভোটের অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, বেঁচে থাকার অধিকারকেও ক্ষুণ্ন করছে,' বলেন ফখরুল।

তিনি আরও বলেন, 'আজকে বাংলাদেশের সামনে একটা সত্য এসে উপস্থিত হয়েছে যে, এখানে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য হতে পারে না এবং কখনোই এখানকার মানুষ তার নিজের ইচ্ছায় তার নিজের মত প্রকাশ করতে পারবে না ভোট প্রদানের মাধ্যমে যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এটা শুধু আমার কথা নয়, আজকে প্রত্যেকের এই কথা এসে দাঁড়িয়েছে—বর্তমান সরকার থাকলে কখনোই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না।'

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

5h ago