প্রস্তাবিত বাজেটে দুর্নীতি-অর্থপাচার রোধে দিক-নির্দেশনা নেই: টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে দিক-নির্দেশনা নেই বলে পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি।

টিআইবি বলে, চলমান অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমার মূল কারণ লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থপাচার। এই মরণব্যাধিকে প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী একেবারেই স্বীকার করেননি।

সংস্থাটি আরও বলছে, 'কোভিড সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধপ্রসূত বৈশ্বিক সংকটের ফলে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সন্দেহ নেই; কিন্তু দেশে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে মূল অন্তরায় যে অবারিত দুর্নীতি ও গগণচুম্বি অর্থপাচার, তা নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রকার দিক-নির্দেশনাহীন উচ্চাভিলাষী বাজেট কীভাবে অর্থবহ বাস্তবায়িত হবে তা যেমন পরিষ্কার নয়, তেমনভাবে ক্ষমতার বলয়ের বাইরে দেশের আপামর জনগণের জন্য এই বাজেট কোনো ভূমিকা রাখবে, এমন আশা একেবারেই অমূলক।'

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় ডলার সংকট মোকাবিলা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠনের জন্য আমদানিতে কঠোরতা, ঋণপত্রে নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং একাধিক মুদ্রা বিনিময় হার থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের পাশাপাশি দেশের সার্বিক অর্থনীতির অন্তর্নিহিত মরণব্যাধি দুর্নীতি ও অব্যাহত মুদ্রাপাচারের বিষয়টিকে নির্বিকার এড়িয়ে গেলেন। অথচ সরকারের অজানা নয় যে, বাংলাদেশে যদি মধ্যম মাত্রায় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতো তাহলে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি কমপক্ষে ২-৩ শতাংশ বেশি হতো ও জনগণের জন্য অর্থবহ হতো; অন্যদিকে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য প্রাক্কলন অনুযায়ী বছর গড়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে কমপক্ষে ১২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিশাল দুষ্টচক্রকে নিয়ন্ত্রণের দিক-নির্দেশনাহীন বাজেট যে আরও দুর্নীতি ও অর্থপাচার সহায়ক হবে তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, বারবার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করে দিয়ে কোনো সরকারই কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আদায় করতে পারেনি। বরং এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ কালো টাকার মালিকদেরই শুধু সুরক্ষা দেওয়া গেছে এবং বাস্তবে দুর্নীতির গভীরতার বিস্তারে অবদান রেখেছে; সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের নৈতিক ভিত্তি দুর্বলতর হয়েছে। তাই এই সুযোগটি যেন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে আবারো না দেওয়া হয় সে ব্যাপারে সরকার দৃঢ়তা দেখাবে এমনটাই প্রত্যাশা।'

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

9h ago