বর্ষায় সিলেটের নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়লেও নেই দীর্ঘমেয়াদী বন্যার শঙ্কা

বৃষ্টিতে জলমগ্ন আছেসদর উপজেলার মইয়ারচর এলাকা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের মেঘালয় ও আসাম প্রদেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেট বিভাগের ৪ জেলার নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে।

এতে স্বল্প মেয়াদে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদী বন্যার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল শনিবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ রোববার সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সারিগোয়াইন, ঝালুখালি, ভোগাই-কংশ, সোমেশ্বরী ও যাদুকাটা নদীর পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিভাগের ৪ টি জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

কেন্দ্রের তথ্যমতে, রোববার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং হবিগঞ্জের বাল্লা পয়েন্টে খোয়াই নদী বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়াও সুরমা নদী সিলেট শহর পয়েন্টে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নিচে, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৭৬ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, মনু, ধলাই, পুরাতন সুরমা, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভোগাই, কংস নদীর পানি এখনো বিপদসীমার অনেকটা নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেটের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আরও ৪৪ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বেশ কিছু গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া, অতিবৃষ্টিতে সিলেট নগরীর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অতিবৃষ্টিতে নদীর পানি বাড়ছে যা জলশূন্য হাওরে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী স্বল্পমেয়াদে বন্যার শঙ্কা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা নেই।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, 'গতকাল শনিবার কিছু সময়ের জন্য কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তারপর আবারও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হলেও আপাতত তীব্র বন্যার আশঙ্কা নেই।'

সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য নগরীর ড্রেনেজ সিস্টেম দায়ী বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'নগরীর পার্শ্ববর্তী সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু ছড়া ও ড্রেনে প্রতিবন্ধকতার কারণে শহরের পানি নদী পর্যন্ত পৌছাতে না পারায় নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।'

এদিকে নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়লেও মাঠে থাকা আউশ ধান কিংবা শাকসবজির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন খান।

তিনি বলেন, 'পানি যদি আর বেশি না বাড়ে তাহলে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। তবে বন্যা হলে মাঠে থাকা আউশ ধান কিংবা শাকসবজির কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।'

উল্লেখ্য, গত বছর জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় প্রবল বন্যার সৃষ্টি হয় যা দীর্ঘ মাসব্যাপী তীব্র ভোগান্তির সৃষ্টি করে।

Comments

The Daily Star  | English

Money laundering: NBR traces Tk 40,000cr in assets abroad

The National Board of Revenue has found assets worth nearly Tk 40,000 crore in five countries which it believes were bought with money laundered from Bangladesh, said the Chief Adviser’s Office yesterday.

3h ago