চামড়া ব্যবসায়ীরা এ বছর ভালো দাম পাবেন

চামড়া, ঈদুল আজহা,
সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের একটি ট্যানারিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করছেন শ্রমিকরা ছবি: পলাশ খান

আসন্ন ঈদুল আজহায় চামড়া ব্যবসায়ী ও খামারিরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ, দেশে-বিদেশে চলমান অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও চলতি বছর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বেড়েছে।

এছাড়া ট্যানারি মালিকরা গত কয়েক বছর ধরে বকেয়া থাকা টাকার বড় অংশ পরিশোধ করেছেন। ফলে, ব্যবসায়ীদের আর্থিক সমস্যার কিছুটা সমাধান হয়েছে।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, 'অনেক ট্যানারি মালিক তাদের আগের পাওনা পুরোপুরি বা বড় অংশ পরিশোধ করায় বকেয়া ১০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে।'

গত বছর ১১০ কোটি টাকা বকেয়া ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এ বছর বকেয়ার বড় অংশ পরিশোধ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, বাকি বকেয়া অর্থের একটি বড় অংশ ঈদুল আজহার আগেই পরিশোধ করা হবে।'

এই ব্যবসায়ী নেতা জানান, চামড়া খাতের স্টেকহোল্ডাররা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে বকেয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি আরও জানান, তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা যেন কাঁচা চামড়া কিনতে পারেন, সেজন্য ঈদের আগে ট্যানারি মালিকদের অর্থ পরিশোধ করতে বলেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশে প্রতিবছর উৎপাদিত কাঁচা চামড়ার প্রায় অর্ধেকই আসে ঈদুল আজহায়। আর ট্যানারিগুলো কোরবানির পশুর চামড়ার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে। বেশিরভাগ ট্যানারি মূলত সাভার ও চট্টগ্রামে অবস্থিত।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, 'এ বছর ১ কোটি ৩০ লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে ৮৫ লাখ গরু এবং ১৫ লাখ ছাগল, মহিষ ও ভেড়া থাকবে।'

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানান, চলতি বছর এ খাতে ১৮০ কোটি টাকার ঋণ আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'দেশি-বিদেশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে চাহিদা বেশি থাকায় কাঁচা চামড়ার পুরোনো মজুত প্রায় শেষ।'

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে বাংলাদেশ ১.১২ বিলিয়ন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ০.৪২ শতাংশ বেড়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলোতে গার্মেন্টসের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী চামড়া খাতের ইতিবাচক প্রভাব আছে।

শাহীন আহমেদ বলেন, 'করোনার মারাত্মক প্রভাব থেকে পশ্চিমা অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও মুদ্রাস্ফীতি কমার কারণে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের রপ্তানি বাড়তে পারে। এ বছর কাঁচা চামড়া রপ্তানির সম্ভাবনা ভালো।'

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, 'স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল পাওয়ায় লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সার্টিফিকেশন পাওয়া গেলে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য শিল্প বহুবিলিয়ন ডলারের শিল্পে পরিণত হওয়ার সক্ষমতা আছে।'

এলডব্লিউজি জুতা, পোশাক ও গৃহসজ্জা সামগ্রী ব্র্যান্ড এবং চামড়া প্রস্তুতকারকদের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক উদ্যোগ। কিন্তু, স্বীকৃতির অভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে চলমান হারের চেয়ে অনেক কমে বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের চীনে চামড়া রপ্তানি করতে হয়।

আফতাব খান বলেন, 'লবণের উচ্চমূল্য তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। বস্তাপ্রতি লবণের দাম বেড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা হয়েছে। গত বছর যা ছিল ৯০০ টাকা।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Malaysia agrees to recruit 'large number' of Bangladeshi workers

Assurance will be given to ensure their wages, safety, and overall welfare, according to ministry officials

1h ago