মোদি-বাইডেন বৈঠক/

'ভারত এমন প্রযুক্তি চায়, যা যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া কারো কাছে নেই'

ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রীয় নৈষভোজে হাত মেলাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি ও জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রীয় নৈষভোজে হাত মেলাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি ও জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে অস্ত্র বিক্রি ও সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তি স্থানান্তরের চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ায় চীনের আধিপত্য কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে বাইডেন প্রশাসন নয়া দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করছে।

আজ শুক্রবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফরের সময় এ ঘোষণা দেয় বাইডেন প্রশাসন। তবে এই চুক্তি এবং ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ে যেকোনো ধরনের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছু জটিলতা। মূলত, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কঠোর অস্ত্র ও প্রযুক্তি রপ্তানি আইন এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করতে পারে।

তবে কংগ্রেসের একজন সহকারী জানান, ভারতের সঙ্গে প্রযুক্তি সমঝোতা এগিয়ে নিতে মার্কিন কংগ্রেস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অসংখ্য বাধার সম্মুখীন হবে, কারণ কিছু কর্মকর্তা মার্কিন প্রযুক্তিকে 'সুরক্ষিত' রাখার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র উল্লেখ করেন, ভারত এমন সব প্রযুক্তি চাইছে, যা অনেক ঘনিষ্ঠ মার্কিন মিত্রদের কাছেও নেই। রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত রেখে এবং ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের নিন্দা না জানিয়েও তারা এ ধরনের চাহিদার কথা বলছে।

তিনি জানান, মিত্র রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টিতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। আর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে মিত্র না হয়েও একই ধরনের সুবিধা পাচ্ছে। তাদেরকে মিত্র রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা বা দায়িত্ব নিতে হচ্ছে না। সুতরাং নিঃসন্দেহে বিষয়টিতে জটিলতা দেখা দেবে।

বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, সেমিকন্ডাক্টর, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপকরণ, প্রযুক্তি, মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও আমদানি-রপ্তানির ২ দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

চুক্তির মধ্যে আছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিকের ভারতে জেট ইঞ্জিন উৎপাদন শুরুর ঘোষণা। যার ফলে ভারতীয় সামরিক উড়োজাহাজের জন্য উন্নত ইঞ্জিন আরও সহজলভ্য হবে। এর পাশাপাশি, ভারত মার্কিন নির্মিত জেনারেল অ্যাটমিকস এমকিউ-৯বি ড্রোনও কেনার পরিকল্পনা করছে।

এ ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাফিক ইন আর্মস রেগুলেশন (আইটিএআর) নামে একটি কঠোর আইন রয়েছে, যা প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে।

এমন কী, এই আইনের কারণে দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াকেও পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন সাবমেরিন প্রযুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়েছে বাইডেন প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটের ভারত সংক্রান্ত কমিটির (সিনেট ইন্ডিয়া ককাস) সদস্য ডেমোক্র্যাট মার্ক ওয়ার্নার ও রিপাবলিকান জন করনিন ভারতের কাছে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম বিক্রি সহজ করতে নতুন আইন উত্থাপন করেন।

পেন্টাগনের সাবেক কর্মকর্তা বিল গ্রিনওয়াল্ট বলেন, জেট ইঞ্জিন ও সামরিক ড্রোনের চুক্তির অনুমোদন সহজেই পাওয়া যাবে। তবে জেনারেল ইলেকট্রিক এখনো রপ্তানির অনুমোদন পায়নি।

'কংগ্রেসের নিরীক্ষা ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় সময় লাগতে পারে এবং তারা কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে পারে। সিগার্ডিয়ান ড্রোনের ক্ষেত্রে এরকম হতে পারে', যোগ করেন তিনি।

গ্রিনওয়াল্ট আরও মন্তব্য করেন, 'এখানে আরেকটি বিষয় আছে, যা হল, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আসা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কতটুকু বিধিনিষেধ ভারত মেনে নেবে।'

গ্রিনওয়াল্ট জানান, আইটিএআর বেশ কিছু শর্ত ও সীমাবদ্ধতা আরোপ করবে। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির সঙ্গে ভারত তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটাতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে পারে।

ভারতের তথ্য প্রযুক্তি খাতে পারদর্শিতা রয়েছে। ২ দেশের শক্তিমত্তার বিষয়গুলোর সমন্বয় করতে পারলে উভয়ই উপকৃত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Stocks fall on poor performance of large companies

Indexes of the stock market in Bangladesh declined yesterday on rising the day before, largely due to the poor performance of Islami Bank Bangladesh along with the large-cap and blue-chip shares amid sales pressures..Large-cap refers to shares which account for large amounts in market capi

2h ago