ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা

বন্যা
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমবাদ পশ্চিম সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ গতকাল রোববার সকালে যমুনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে ওই বিদ্যালয়ে ২ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে | ছবি: মির্জা শাকিল/স্টার

সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

আরও আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

আজ সোমবার সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বন্যা
ছবিটি আজ সোমবার সকালে সুনামগঞ্জের দেওকলস ইউনিয়ন এলাকা থেকে তোলা | ছবি: শেখ নাসির/স্টার

এছাড়া কমলাকান্দায় সোমেশ্বরী নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ও দেরাইয়ে পুরাতন সুরমার পানি ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্তব্যরত কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বড়ুয়া জানিয়েছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুশিয়ারা, মনু-খোয়াই ছাড়া প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এলে চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এদিন সকালের তথ্য অনুযায়ী, গঙ্গা-পদ্মায় পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।

ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা নদী এবং দুধকুমার নদের পানির দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

বন্যা
ছবিটি আজ সোমবার সকালে সুনামগঞ্জের দেওকলস ইউনিয়ন এলাকা থেকে তোলা | ছবি: শেখ নাসির/স্টার

আজ সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৩১৫ মিলিমিটার, ছাতকে ২১৮, লালাখালে ১৫১, রোহানপুরে ৯২, দিনাজপুরে ৬০, জাফলংয়ে ২৪৫, জারিয়াজাঞ্জাইলে ১৭৫, দুর্গাপুরে ১০৯, মহেলখোলায় ৯০, সিরাজগঞ্জে ৬০, পঞ্চগড়ে ২৩০, সুনামগঞ্জে ১৭০, গাইবান্ধায় ১০২, কানাইঘাটে ৭৮ ও ডালিয়ায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের তথ্য রেকর্ড করেছে বপূস।

এছাড়া, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিকিম, অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা অঞ্চলের শিলংয়ে ৫৭ ও জলপাইগুড়িতে ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

আবহওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে।

সেই সঙ্গে এসব এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বন্যা
ছবিটি আজ সোমবার সকালে সুনামগঞ্জের দেওকলস ইউনিয়ন এলাকা থেকে তোলা | ছবি: শেখ নাসির/স্টার

আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অতি ভারী বৃষ্টি (৮৮ মিলিমিটারের বেশি) মূলত দেশের উত্তরাঞ্চলের দিকে হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ভারী বৃষ্টি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) দেশের অন্যান্য বিভাগেও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'

অধিদপ্তর জানিয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সাবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

খণ্ডকালীন পূর্বাভাসে এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

'Election Commission shamelessly favouring a particular party'

Hasnat Abdullah says police obstructed NCP leaders and activists from entering EC building

1h ago