বাইসাইকেল রপ্তানি কমেছে ১৫.৩১ শতাংশ

বাইসাইকেল, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ইপিবি, রপ্তানি,
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে এমনভাবে বদলে দিয়েছে, যা বাইসাইকেল রপ্তানিতে প্রভাব ফেলেছে। ছবি: সংগৃহীত

গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বাইসাইকেল রপ্তানি ১৫ দশমিক ৩১ শতাংশ কমেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই চাকার এই বাহন রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ১৪২.২৪ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের দুটি কোম্পানি বাইসাইকেল রপ্তানি বাড়াতে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। এই দুটি কোম্পানি বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বাইসাইকেল পাঠায়।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন বিভাগের পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, 'মূলত ইউরোপের ক্রেতারা করোনার পরে পর্যাপ্ত মজুত রেখেছিলেন। কিন্তু, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সেগুলো এখনো বিক্রি হয়নি।'

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'এ কারণে সাইকেল রপ্তানি কমেছে।'

চলতি বছরের অক্টোবর থেকে বাইসাইকেল রপ্তানি আবার বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'তখন পুরোনো স্টক শেষ হয়ে যাবে, ফলে নতুন অর্ডার আসবে।'

তার দেওয়া তথ্য মতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাইসাইকেল নির্মাতারা অনেক ভালো করেছিল, কারণ করোনার পর প্রচুর অর্ডার এসেছিল।

কিন্তু, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে এমনভাবে বদলে দিয়েছে, যা বাইসাইকেল রপ্তানিতে প্রভাব ফেলেছে।

আরএফএলের বছরে ৯ লাখ বাইসাইকেল তৈরির সক্ষমতা আছে। যার এক তৃতীয়াংশ ইউরোপের বাজারে রপ্তানি করা হয়।

তিনি বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি বাড়াতে আমাদের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।'

রপ্তানির সুযোগ ও সাইকেল উত্পাদনের ‍সুবিধার কারণে এই শিল্পে অন্তত ৭ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে বলে জানান তিনি।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৃতীয় ও বিশ্বের অষ্টম বাইসাইকেল রপ্তানিকারক দেশ।

দেশের বৃহত্তম বাইসাইকেল রপ্তানিকারক মেঘনা গ্রুপ অব কোম্পানিজের পরিচালক লুৎফুল বারী বলেন, 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইউরোপীয় অর্থনীতি এখনো সংকটে থাকায় বাইসাইকেল রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমেছে।'

তিনি মনে করেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে আগামীতে সাইকেল রপ্তানির এই নিম্নমুখী প্রবণতা আরও তীব্র হতে পারে। বাংলাদেশ মূলত জার্মানিতে বাইসাইকেল রপ্তানি করে। দেশটির অর্থনীতি এখনো চাপে আছে, তাই বাইসাইকেলের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

তিনি বলেন, 'গত অর্থবছরের তুলনায় রপ্তানি আদেশ প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।'

তিনি জানান, এর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বাইসাইকেল তৈরির খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোয় উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে।

'করোনা মহামারির পরে বাইসাইকেল রপ্তানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং বেশি চাহিদা মেটাতে আমরা উত্পাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছি। কিন্তু, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এই শিল্পকে নতুন চ্যালেঞ্জের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর এই পরিস্থিতির কবে উন্নতি হবে তা কেউ জানে না,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Shows ASK data; experts call for stronger laws, protection

53m ago