ডেঙ্গু

মশারি, কয়েল ও স্প্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধির অভিযোগ

ডেঙ্গু, মশারি, কয়েল, অ্যারোসল,
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ক্রেতাকে মশারি দেখাচ্ছেন দোকানি। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ থেকে বাঁচতে মানুষ মশারি, কয়েল, অ্যারোসল স্প্রে ও র‌্যাকেটের মতো মশাবিরোধী পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

এ বছর দেশে ডেঙ্গু জ্বরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, '৫৭ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।'

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গতকাল সোমবার ডেঙ্গু জ্বরে ৩ জন মারা গেছেন। নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮৯ জন।

তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে আগস্ট-সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের মূল সময় হওয়ায় এটি এখনো চরম অবস্থায় পৌঁছায়নি।

রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট ও কলাবাগান এলাকার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় মশানিরোধক পণ্যের বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

ক্রেতাদের অভিযোগ, চাহিদা বাড়ার সুযোগ নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা মশারি, কয়েল, স্প্রে ও র‌্যাকেটের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

মিরপুরের বাসিন্দা ইশরাত জাহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে দিনরাত কয়েল জ্বালিয়ে রাখছি।'

তার দাবি, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বিক্রেতারা এখন ক্রেতাদের কাছ থেকে মশার কয়েল ও স্প্রের দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা বেশি রাখছেন।

রাজধানীর দিলু রোডের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মো. আব্বাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর আগে কখনো মশা নিয়ে সতর্ক ছিলাম না। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের পর মশারি ও কয়েল কিনতে বাধ্য হয়েছি।'

তিনি আরও বলেন, 'গত কয়েক মাসের তুলনায় মশা মারার সরঞ্জামের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়া খুবই হতাশাজনক।'

রাজধানীর পল্লবীর খুচরা বিক্রেতা নুরুল আলম সিকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আগের সময়ের তুলনায় এখন মশা মারার পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে।'

বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ১৮ থেকে ২০ ক্যান মশার স্প্রে বিক্রি হয়। স্বাভাবিক সময়ে এটি ৬ ক্যান ছিল।

এ ছাড়া, এখন প্রতি ২ দিনে ১২ প্যাকেট মশার কয়েল বিক্রি হচ্ছে। আগে এই পরিমাণ কয়েল বিক্রি করতে ১ সপ্তাহ লাগতো।

৬০টিরও বেশি আউটলেট নিয়ে দেশের অন্যতম ব্যস্ত সুপারশপ 'স্বপ্ন'-এ গত কয়েক সপ্তাহে মশা মারার পণ্যের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

'স্বপ্ন'-র এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে জানান, গত মাসের তুলনায় মশা ও পোকামাকড়বিরোধী পণ্যের বিক্রি ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

কারওয়ান বাজার সুপার মার্কেটের রাফি ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রনি ডেইলি স্টারকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ১০-১২টি মশা মারার র‌্যাকেট বিক্রি হতো।

'প্রতিটি মশা মারার র‌্যাকেট ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে' জানিয়ে তিনি দাবি করেন, 'র‌্যাকেটের বিক্রি বাড়লেও দাম বাড়েনি।'

একই এলাকায় মশারি বিক্রেতা মোহাম্মদ রাসেল শেখ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে প্রতি দিন ২ থেকে ৩ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করতাম। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মশারি বিক্রি করছি।'

তিনি আরও বলেন, 'আগে কেউ যদি ১ ক্যান অ্যারোসল বা রেপেলেন্ট স্প্রে কিনতেন, এখন তারা ২ ক্যান কিনছেন। অনেকে এর চেয়ে বেশি কিনছেন।'

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক তৌহিদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগের তুলনায় এবার মশা মারার র‌্যাকেট বিক্রি প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে।'

'প্রতিটি র‌্যাকেটের দাম ৫০০ থেকে ৫২০ টাকার মধ্যে' উল্লেখ করে তিনি জানান, গ্রামাঞ্চলে মশার কয়েলের চাহিদা বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

5h ago