ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ

ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের বিদায়

ছবি: বিসিসিআই টুইটার

বোলারদের সম্মিলিত অবদানে দুইশ পার হওয়ার পরপর ভারত 'এ' দলকে থামাল বাংলাদেশ 'এ'। এরপর লক্ষ্য তাড়ায় দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও নাঈম শেখ মারমুখী কায়দায় খেলে গড়ে দিলেন শক্ত ভিত। তবে পরের ব্যাটাররা করলেন ভীষণ হতাশ, নামলেন উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার মিছিলে। ফলে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হলো লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।

শুক্রবার শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে ক্রিকেটারদের শরীর ভাষায় উত্তাপ ছড়ানো দ্বিতীয় সেমিতে ৫১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৪৯.১ ওভারে অলআউট হয় ২১১ রানে। জবাবে ৯৪ বল বাকি থাকতে ১৬০ রানেই গুটিয়ে যায় সাইফ হাসানের নেতৃত্বাধীন দল।

বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে ভারতকে ফাইনালের টিকিট পাইয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাদের দুই বাঁহাতি স্পিনার। নিশান্ত সিন্ধু ৮ ওভারে মাত্র ২০ রানে শিকার করেন ৫ উইকেট। মানাভ সুথার ৩ উইকেট নিতে ৮.২ ওভারে দেন ৩২ রান। ভারতের দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যাটারদের দায়ও কম নয়। দ্রুত রান তোলার চাহিদা না থাকলেও একের পর এক বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দেন তারা। আট ব্যাটার ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে।

নাগালের মধ্যে থাকা রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। পেসার হার্শিত রানার প্রথম ওভারেই ৪টি চার মারেন নাঈম। পরে তাকে আর বোলিংয়েই আনেননি ভারতের অধিনায়ক ইয়াশ ধুল। অন্যপ্রান্তে তানজিদও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাত খোলেন।

ত্রয়োদশ ওভারে ভাঙে ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটি। সুথারের বল স্টাম্পে টেনে আউট হন নাঈম। ৪০ বলে ৬টি চারে ৩৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর আর কোনো ভালো জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে আর ৯০ রান যোগ করতেই তারা বাকি সব উইকেট তারা খুইয়ে ফেলে। শেষ ৭ উইকেটের পতন হয় মাত্র ৩৭ রানে।

দলের সংগ্রহ একশ ছোঁয়ার আগেই ফেরেন হাফসেঞ্চুরিয়ান তানজিদ। সর্বোচ্চ ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৫৬ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৮টি চার। চারটি ক্যাচ ধরা নিকিন জোসের তালুবন্দি হয়ে ঘটে তার ইনিংসের সমাপ্তি। এরপর আর কোনো ব্যাটার ক্রিজে লম্বা সময় থাকতে পারেননি।

সুথারকে সুইপ করার চেষ্টায় জাকির হাসান পড়েন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রিপ্লেতে দেখা যায়, বলের ইমপ্যাক্ট অফ স্টাম্পের বাইরে হতে পারত। অধিনায়ক সাইফের ২৪ বলে ২২ রানের ইনিংস থামান অফ স্পিনার অভিষেক শর্মা। এরপর সৌম্য সরকার, আকবর আলী ও শেখ মেহেদী হন ব্যর্থ।

একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখতে থাকেন মাহমুদুল হাসান জয়। নবম ব্যাটার হিসেবে তিনি মাঠ ছাড়েন। ৪৬ বলে ২০ রান করেন তিনি। তাকে অভিষেকের ক্যাচ বানিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন সিন্ধু। রিপন মন্ডল সুথারের শিকার হলে হার নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।

এর আগে আঁটসাঁট বোলিংয়ে ভারতের রান প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখেন শেখ মেহেদী, রিপন ও তানজিম হাসান সাকিব। পরে সাইফ ও রাকিবুল হাসানও রান দেওয়ায় দেখান কৃপণতা। ২টি করে উইকেট যায় শেখ মেহেদী, তানজিম ও রাকিবুলের ঝুলিতে।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন ধুল। ৮৫ বলে ৬টি চার হাঁকান তিনি। চারে নেমে একপ্রান্ত আগলে থেকে তিনি আউট হন শেষ ব্যাটার হিসেবে। ১৩৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ার পর সুথারকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৪১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন ধুল। তার কল্যাণেই মূলত দুইশ পার হয় ভারতের সংগ্রহ।

ভারতের ইনিংস চলাকালেও প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তের দেখা মেলে। ১৪তম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুলের বল ঠিকমতো খেলতে পারেননি জোস। বল তার ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক আকবরের গ্লাভসে। তৎক্ষণাৎ স্টাম্প ভেঙে দেন তিনি। আউট হয়েছে কিনা দেখার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের দ্বারস্থ হন মাঠের আম্পায়ররা।

অনেক সময় নিয়ে রিপ্লে দেখে প্রথম লাল বাতি জ্বালান ফয়সাল আফ্রিদি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে বিস্ময় জাগিয়ে আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন পাকিস্তানের এই আম্পায়ার। জ্বলে ওঠে সবুজ বাতি। তবে জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জোস। ২৯ বলে ১৭ রানে আউট হন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

2h ago