বর্ষায় চাহিদা কমায় কমছে রডের দাম

রডের দাম
বর্ষার কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় দেশে রডের দাম কমেছে। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

বর্ষায় সাধারণত নির্মাণ কাজে ধীরগতি থাকে। এ কারণে রডের চাহিদা কমে যায়। আর চাহিদা কমে যাওয়ায় গ্রেড ৬০ এর এমএস রডের দাম কিছুটা কমেছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে দাম কমছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার প্রতি টন রডের দাম ছিল সাড়ে ৯৯ হাজার টাকা। এটি আগে ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৫০০ টাকা।

বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (বিএসআরএম) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টির কারণে রডের চাহিদা কমে গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বর্ষা শুরু হওয়ায় সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পসহ সব নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ কারণে উৎপাদনকারীরা রডের দাম কমিয়েছেন।'

সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, মাত্র ৪ মাস আগেও এমএস রডসহ অন্যান্য প্রধান নির্মাণ সামগ্রীর দাম ঘন ঘন বাড়ছিল। এখন উন্নয়ন কাজে ধীর গতির কারণে অনেক শ্রমিককে কাজ হারাতে হচ্ছে।

ডলার সংকটের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় রডের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। গত মার্চে এমএস রডের দাম টনপ্রতি ১ লাখ টাকা ছাড়িয়েছিল।

উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরাসরি রড কেনা গেলে টনপ্রতি দাম ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা পড়ে বলে জানান তপন সেনগুপ্ত।

তিনি আরও জানান, ইস্পাত তৈরির কাঁচামাল স্ক্র্যাপ আয়রন আন্তর্জাতিক বাজারে এখন টনপ্রতি প্রায় ৪৩০ ডলারে পাওয়া যাচ্ছে। আগে এটি ছিল ৫৬০ ডলার।

তবে এলসি খোলার ওপর বিধিনিষেধ এখনো তুলে না নেওয়ায় রড উৎপাদনকারীরা কম দামের স্ক্র্যাপ লোহা আমদানি করতে পারছেন না।

কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (কেএসআরএম) সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক জসিম উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের মিলগেটে প্রতি টন রড ৯৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।'

তিনি মনে করেন, বর্ষা মৌসুমজুড়ে রডের দাম কমতে থাকবে। এটি আগামী অক্টোবর পর্যন্ত চলতে পারে।

'তবে দামে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না। কারণ, এলসি খোলায় বিধিনিষেধের কারণে রড উৎপাদনকারীরা কম দামে স্ক্র্যাপ আয়রন কিনতে পারছেন না,' যোগ করেন তিনি।

আনোয়ার ইস্পাতের হেড অব মার্কেটিং আবু জুবাইদ মো. রাসেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আন্তর্জাতিক বাজারে স্ক্র্যাপ লোহার চাহিদা কমে যাওয়ায় এর দাম কমেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুমে ইস্পাতের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ সময় সরকারের উন্নয়ন কাজে ধীরগতিতে চলে। এ কারণে ইস্পাতের চাহিদা ও দাম কমেছে।'

ব্র্যান্ডভেদে মিলগেটে রডের দাম সাড়ে ৯৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৯৭ হাজার টাকার মধ্যে আছে বলেও জানান তিনি।

আবু জুবাইদ মো. রাসেল বলেন, 'চাহিদা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ কমে যাওয়ায় আগামী অক্টোবর পর্যন্ত রডের দাম কম থাকতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'সরকার ৪০ শতাংশেরও বেশি ইস্পাত কেনে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে উন্নয়ন ব্যয় কমে যাওয়ায় ইস্পাত ব্যবহারের ওপর এর প্রভাব পড়বে।'

তবে করোনা মহামারির সময়ের মতো রডের দাম খুব বেশি কমবে না বলে মনে করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
July Declaration: Where is the roadmap for our future journey?

July Declaration: Where is the roadmap for our future journey?

Denigration of our Liberation War will never be acceptable

12h ago