লাবুশেনের বীরত্বে বৃথা গেল বাভুমার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি
মূল একাদশে ছিলেন না মার্নাস লাবুশেন। ক্যামেরুন গ্রিনের হঠাৎ চোটে কনকাশন সাব হিসেবে সুযোগ পেয়ে গেলেন। আর সুযোগ পেয়েই অ্যাস্টন অ্যাগারকে নিয়ে খাঁদের কিনারা থেকে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিলেন অবিশ্বাস্য এক জয়। অথচ ওপেনিংয়ে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে কী দারুণ এক ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন টেম্বা বাভুমা।
বৃহস্পতিবার ব্লুমফন্টেইনে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ব্যাট করে ২২২ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। জবাবে ৫৮ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে অজিরা।
এদিন ম্যাচের এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল ম্যাচটা যেন বড় ব্যবধানেই জিততে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ১১৩ রানেই সাত ব্যাটার ফিরেছিলেন সাজঘরে। জয় থেকে তখনও ১১০ রান দূরে ছিল তারা। হাতে ছিল মাত্র ৩টি উইকেট। কিন্তু বাকি কাজ অ্যাগারকে নিয়ে শেষ করে তবেই মাঠ ছাড়েন লাবুশেন। ক্যামেরুন গ্রিনের চোট যেন আশীর্বাদ হয়ে আসে তাদের জন্য। এর আগেও ২০১৯ সালে অ্যাশেজ সিরিজে স্টিভেন স্মিথের কনকাশন সাব হয়ে এমনই এক কীর্তি গড়েছিলেন লাবুশেন।
অ্যাগারকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন ১১৩ রানের জুটি গড়েই মাঠ ছাড়েন লাবুশেন। নিজেও খেলেছেন হার না মানা ৮০ রানের ইনিংস। ৯৩ বলের এই ইনিংসে ৮টি চার মেরেছেন এই ব্যাটার। অথচ আসন্ন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে রাখা হয়নি তাকে। অবশ্য দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন অলরাউন্ডার অ্যাগারও। ৬৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৮ রান করেন তিনি।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে এদিন শুরুতেই ডেভিড ওয়ার্নারকে খালি হাতে হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রোটিয়া পেসারদের তোপে ব্যর্থ হন অধিনায়ক মিচেল মার্শ, জশ ইংলিশ, আলেক্স কেয়ারি, মার্কাস স্টোয়নিসও। তবে ট্রাভিস হেড কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু তাতে সে অর্থে কোনো লাভ হয়নি। অর্ধেক পথ না যেতেই শীর্ষ সাত ব্যাটার চলে যান সাজঘরে। সেখান থেকে লাবুশেন ও অ্যাগারের বীরত্বে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকাও। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে তুলে নেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। ক্রিকেট ইতিহাসের ১৩তম ব্যাটার হিসেবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। আর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দ্বিতীয়। এর আগে ২০০০ সালে শারজাহতে তাদের হয়ে এই কীর্তি গড়েছিলেন হার্শাল গিবস।
বোলারদের সৌজন্যে জয়ের নায়ক হওয়ার খুব কাছেই ছিলেন বাভুমা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের হাতাশা উপহার দেন ওই লাবুশেন ও অ্যাগার জুটি। এদিন ১১৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন বাভুমা। ১৪২ বলে ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া ৩২ রান করেন মার্কো ইয়ানসেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪১ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড। দুটি শিকার স্টয়নিসের।
Comments