পাসপোর্ট-টিকিট ছাড়াই উড়োজাহাজে উঠে গেল শিশু

পাসপোর্ট-টিকিট ছাড়াই উড়োজাহাজে শিশু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ফটো স্টার

পাসপোর্ট, টিকিট কিংবা বোর্ডিং কার্ড... সঙ্গে কিছু না থাকার পরও ১২ বছরের একটি শিশু বিমানবন্দরের সবধরনের নিরাপত্তা এড়িয়ে কুয়েতগামী একটি ফ্লাইটে বসতে সক্ষম হয়। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই ঘটনা ঘটে।

কেবলমাত্র ওই ফ্লাইটের সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ার কারণে শিশুটিকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর পুলিশ।

জানা যায়, শিশুটি তিন দিন আগে গোপালগঞ্জের একটি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এসেছে।

কোথাও কোনো বাধা না পেয়ে একটি শিশুর এভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠা পড়ার ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক কাজ করা অন্তত পাঁচটি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাকে এড়িয়ে যেতে পেরেছে শিশুটি।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ভোররাত ৩টা ১০ মিনিটে শিশুটিকে কুয়েতগামী একটি ফ্লাইটে পাওয়া যায়। শিশুটি যে সিটে বসেছিল সেই সিটের টিকিটধারী ব্যক্তি যখন আসেন তখন কেবিন ক্রুর নজরে আসে বিষয়টি। তিনি শিশুটির সঙ্গে কোনো অভিভাবককে দেখতে পাননি এবং শিশুটির কোনো টিকিট, পাসপোর্ট কিংবা বোর্ডিং পাসও খুঁজে পাননি।

এই সময় তারা ফ্লাইটে থাকা সবাইকে গুণতে শুরু করেন এবং দেখেন যে তালিকার বাইরে একজন যাত্রী সেখানে বেশি।

এই ঘটনা পাইলটকে জানানো হলে নিরাপত্তাকর্মীরা শিশুটিকে এসে নিয়ে যান।

পরে শিশুটিকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এই ঘটনা বিমানবন্দরের গুরুতর নিরাপত্তা ত্রুটির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও হতবাক করে দিয়েছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, একটি শিশু কীভাবে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের চোখ এড়িয়ে বিমানে উঠতে পারল তা একটি বড় প্রশ্ন।

তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শিশুটি একজন বয়স্ক দম্পতির মাঝখানে ছিল, যা দেখে মনে হয় সে ওই পরিবারেরই সদস্য এবং এভাবেই ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যায়।

এমনটা হওয়ার কথা ছিল না, যোগ করেন তিনি।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'এই ঘটনায় আমি অভিবাসন নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত সবাইকে সাময়িক বরখাস্ত করতে বলেছি এবং কীভাবে সব কিছু ঘটেছে তা খুঁজে দেখতে তদন্ত শুরু করতে বলেছি।

ছেলেটি কোথায় এবং কেন যাচ্ছিল তাৎক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট নয়।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা তদন্ত করছি এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ী কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া জানান, শিশুটি এখন পুলিশের হেফাজতে আছে এবং তার বাবা-মা ঢাকায় আসছে।

তিনি আরও বলেন, তিন দিন আগে একটি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গাজীপুরে আসে শিশুটি। সোমবার রাতে বিমানবন্দর এলাকায় যায়।

একজন ব্যক্তিকে কোনো ফ্লাইটে ওঠার আগে বিমানবন্দরের অন্তত পাঁচটি চেকপয়েন্ট পেরিয়ে আসতে হয়।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এ টি এম নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এটি দেশের প্রধান বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বিপর্যয়ের একটি উদাহরণ, যা উদ্বেগজনক।

তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

10h ago