আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া, এখন বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করে: ফখরুল

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া, এখন বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে, এখন বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, 'রাজনৈতিকভাবে তারা কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে, এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে। দল কখন ভাঙতে যায় প্রতিপক্ষ? যখন সে নিজে দুর্বল। সবল থাকলে তো এটা করবে না। আমাদের দলছুট, বহিষ্কৃত লোকজনদের নিয়ে আবার দল তৈরি করে আরও দল বানাতে চায়।'

তিনি আরও বলেন, 'গোটা জাতি আজ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই ভয়াবহ, গণবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী জবরদখলকারী সরকার; যাকে সরকার বলা যায় না, জনগণের কোনো ম্যানডেট তার কাছে নেই। সেই সরকার আজকে বাংলাদেশের মূল সত্তাকে নষ্ট করে ফেলেছে।'

মৌলিক সব অধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বিএনপির সঙ্গে যদি কারো ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা থাকে তাহলে তার পদোন্নতি-চাকরি কোনোটাই হবে না।'

বুদ্ধিজীবীদের ভয় দেখানো হয় অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমাদের বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনে আসে না, টক-শোতে আসে না। কারণ তাদেরকে ভয় দেখানো হয়; আপনারা যদি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাহলে আপনাদের বিপদ হবে। সবচেয়ে স্পর্শকাতর ব্যাপারে আঘাত করে তারা—ছেলে-মেয়েরা যদি স্কুল-কলেজে পড়ে, তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয় অদৃশ্য জায়গা থেকে। এই রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি।

'আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, আমরা এ কথা ভাবতেও পারি না যে, আমাদের এখন গার্ডেড ওয়েতে কথা বলতে হয়। আমরা কোথায় যাব-না যাব, কার বিয়েতে যাব, অনুষ্ঠানে যাব কি যাব না এ বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়,' বলেন তিনি।

আসল কথা বেরিয়ে আসছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার বড় কথা বলে, উন্নয়ন করেছি, মেগা প্রজেক্ট, দেখতে পায় না কেন, এটা তাদের চোখে পড়ে না, তারা সব অন্ধ—এখন তো আসল কথা বেরিয়ে আসছে যে, বাংলাদেশের তথাকথিত উন্নয়নের যে কথা বলা হচ্ছে, এটা আসলে বাংলাদেশকে আরও বেশি করে ঋণগ্রস্ত করছে।

'যে লোকটা ঋণ করে পোলাও খায়, তাকে কি আমরা বলি যে সম্পদশালী লোক বা সচ্ছল? বলি না। ঋণ করে পোলাও খাওয়ার তো আমার দরকার নেই। এটা আমাদের দেশকে এমন জায়গায় নিয়ে চলে গেছে, যে জায়গা থেকে আমরা এখন সত্যিকার অর্থেই ঋণী হয়ে যাচ্ছি,' বলেন ফখরুল।

তিনি বলেন, 'সবচেয়ে কষ্টকর বাংলাদেশে স্যাংশন হয়েছে। র‌্যাবের ওপর হয়েছিল, নয় জন পুলিশ-র‌্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এখন সামগ্রিকভাবে ভিসা নীতি। ভিসা নীতি তাদের ওপর প্রয়োগ হয় যে দেশগুলো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। যে দেশগুলো মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়। যে দেশগুলো গায়ের জোরে হত্যা করে গুম করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

'অনেকে আছেন খুব খুশি হয়েছে। এটা খুশির কথা না, লজ্জার কথা। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী এই ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী সরকার। যারা আজকে শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গোটা দেশকে-জাতিকে জিম্মি করে ফেলেছে,' বলেন বিএনপি মহাসচিব।

ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ পার্টির কঠিন সময়ে ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ব্রিগেডিয়ার ট্রেইনিং দেওয়া হয় নেতা হওয়ার জন্য; তারা যাতে নেতৃত্ব দিতে পারে। দীর্ঘ দুই-তিন বছর ট্রেইনিং হয়, পড়াশোনা করতে হয়। সেই পড়াশোনা শুধু সমরবিদ্যায় নয়, সমগ্র রাজনৈতিক ইতিহাস, বিজ্ঞান—সব কিছু নিয়েই পড়াশোনা করতে হয়। ফলে সেনা বাহিনী থেকে যে নেতা বেরিয়ে আসেন তিনি বিশাল অভিজ্ঞতা-দক্ষতা নিয়ে আসেন। ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ যে পরিবার থেকে এসেছেন, সেটা রাজনৈতিক পরিবার। মেধাবী মানুষদের পরিবার। সেই কারণেই ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ একজন নেতা হিসেবেই রাজনীতিতে এসেছিলেন। বাংলাদেশকে ভালোবেসে, বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভালোবেসে, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বিএনপি যোগ দিয়েছিলেন।'

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago