মিচেলের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে শামির ফেরার দিনে ফাইফার
নিউজিল্যান্ডের হয়ে যে দুজন সর্বোচ্চ রান করেছেন, দুজনেই পেয়েছেন জীবন। ড্যারিল মিচেল ১৩০ রানের ইনিংস খেলেই তবে থেমেছেন। আর রাচিন রবিন্দ্র করেছেন ৭৫ রান। তবে সেই ক্যাচ মিসের মাশুল অতটা বড় হয়নি, তার কারণ শামি। মিচেল ও রবিন্দ্রর ইনিংসকে ছাপিয়ে গেছে মোহাম্মদ শামির ফাইফার। সেইসাথে ভারতের বাকি বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয় ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ড আটকে গেছে ২৭৩ রানেই।
টসে জিতে বোলিং নেওয়ার পর যে শুরু পায় ভারত, এর চেয়ে দুর্দান্ত আর হতে পারে না! প্রথম ওভারেই জাসপ্রিত বুমরাহ নেন মেডেন। বুমরাহ বিশ্বকাপের ফর্ম ধরে রেখে এদিনও পাওয়ারপ্লেতে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে গেছেন। চার ওভারের স্পেল শেষ করেছেন ১১ রানে। পাওয়ারপ্লেতে আগের ম্যাচগুলোতে মোহাম্মদ সিরাজ খরুচে ছিলেন। এদিন সিরাজও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাঁচ ওভারের স্পেলে ১৬ রান দেন। তাদের দুজনের আঁটসাঁট বোলিংয়ে কুলিয়ে উঠতে পারেনি কিউইরা।
৯ বলে ইনফর্ম ব্যাটার ডেভন কনওয়ে সিরাজের বলে আউট হয়ে যান শূন্য রানে। উইল ইয়াং দুই অঙ্কে চলে গেলেও ইনিংস ১৭ রানের বড় করতে পারেননি। একাদশে সুযোগ পেয়েই মোহাম্মদ শামি প্রথম বলেই পেয়ে যান উইকেট। ইনসাইড এজে ইয়াংয়ের বোল্ড হয়ে ফেরার পর পাওয়ারপ্লে শেষ করে তারা ৩৪ রানে। উইকেটের খাতায় দুইয়ের জায়গায় তিন বসে যেত কিছুক্ষণ পরই। শামির বলে রাবিন্দ্রর ক্যাচ উঠে পয়েন্টে। কিন্তু সেটি অবিশ্বাস্যভাবে তালুবন্দী করতে পারেন না ফিল্ডার। সেই ফিল্ডারের নাম রবিন্দ্র জাদেজা!
১২ রানে জীবন পাওয়া রবিন্দ্র এরপর দুই স্পিনারকে বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে খেলে যান। জাদেজার বলে নিয়মিত স্ট্রাইক বদল করে যাচ্ছিলেন রবিন্দ্র। মিচেল শুরু থেকেই আগ্রাসী মনোভাবে খেলতে থাকেন। অপরপ্রান্তে কুলদীপের উপর চড়াও হন দুজনেই। প্রথম তিন ওভারে দুজনে মিলে মারেন তিনটি ছক্কা। কুলদীপের প্রথম তিন ওভারে আসে ৩২ রান।
একপ্রান্তে জাদেজাকে দিয়ে টানা দশ ওভার করিয়ে ফেলেন রোহিত। জাদেজা তার স্পেল শেষ করেন ৪৮ রানে। বাঁহাতি এই স্পিনারের শেষ ওভারে মিচেলের ক্যাচ উঠে কিপারে। ৫৯ রানে থাকা মিচেলকে ফেরাতে পারেননি রাহুল। ১০২ বলে মিচেল-রবিন্দ্রর জুটি শতরান পেরিয়ে যায়। শেষমেশ তাদের জুটি গিয়ে থামে ১৫৯ রানে। শামির স্লোয়ারে রবিন্দ্র সোজা ক্যাচ তুলে দেন লং অনের হাতে। ৬ চার ও ১ ছক্কার ৭৫ রানের ইনিংস তার থামে যখন, নিউজিল্যান্ড ৩৪তম ওভারে ১৭৮ রানে। আগের ওভারেই মিচেলরও ক্যাচ উঠেছিল, কুলদীপের বলে সেবার লং অফে থাকা বুমরাহ সহজ ক্যাচ মিস দিলে ৬৯ রানে জীবন পান মিচেল।
ক্যাচ মিসের মাশুল পরে ভালোভাবেই দিতে হয় ভারতকে। মিচেল শতক পেয়ে যান ১০০ বলে। ৩৭তম ওভারে ২০০ পেরিয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ড ওই ওভারেই হারিয়ে ফেলে উইকেট। টম ল্যাথামকে এলবিডাব্লিউ বানিয়ে এক অঙ্কেই ফেরান কুলদীপ। নিজের শেষ ওভারে এসে গ্লেন ফিলিপসকেও ফিরিয়ে দেন কুলদীপ। ২৩ রানে ফিলিপকে আউট করে নিজের দশ ওভারের খরচ ৭৩ রানে রাখতে পারেন তিনি।
শেষ দশ ওভারে কিউইরা প্রবেশ করে ২১৯ রান নিয়ে। ভারতীয় পেসারদের দুর্দান্ত রক্ষণাত্মক বোলিংয়ে ভারত আটকে রাখে নিউজিল্যান্ডকে। সেট মিচেলও উড়াল দিতে পারেননি। সেঞ্চুরির পর ২৭ বলে আনেন ৩০ রান। শেষের দিকে টানা উইকেট হারিয়ে মিচেলের যোগ্য সঙ্গও হারিয়ে যায়। ২৪৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর ১৭ রানেই আরও তিন উইকেট খুইয়ে ফেলে কিউরা। পরপর দুই বলে দুই উইকেট নেন শামি, শেষ ওভারে এসে মিচেলকে আউট করলে শামি পেয়ে যান ফাইফার। ১২৭ বলে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ১৩০ রানে থেমে যায় মিচেলের ইনিংস। শেষ দশ ওভারে মাত্র ৫৯ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নেয় ভারত। শেষমেশ নিউজিল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় ২৭৩ রানেই।
Comments