‘কিছু পশ্চিমা শক্তি বাংলাদেশে পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যাতে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে’

ছবি: ইউএনবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, 'কিছু পশ্চিমা শক্তি বাংলাদেশে পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যাতে তারা সহজেই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।'

তিনি বলেন, 'তারা যদি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে পারে, তাহলে তারা বাংলাদেশে পুতুল সরকার গঠন করতে পারবে এবং সহজেই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।'

রোববার সংসদ ভবনে ক্ষমতাসীন দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে (এএলপিপি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য এসব কথা জানান।

সংসদ নেতা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ না দেখালেও শেষের দিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আসতে পারে, এটিকে বিতর্কিত করার জন্য।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, বাংলাদেশে একটি পরাধীন সরকার আনতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়কেই নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।

তিনি বলেন, 'নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছেন যে আমরা (আওয়ামী লীগ) ও বিএনপি যাতে নির্বাচনে আসতে না পারি, সেজন্য স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করছে।'

তিনি বলেন, আমাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে এবং নির্বাচন করতে হবে।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল তাদের জরিপের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদের জন্য প্রার্থী বাছাই করবে।

তিনি বলেন, 'আমি প্রতি ছয় মাস পর পর জরিপ পরিচালনা করেছি এবং সেই জরিপের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে।'

দলের নির্বাচিত প্রার্থীদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'যারা দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বিরোধিতা করবে, তাদের রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে।'

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বৈঠকে উপস্থিত অনেক সংসদ সদস্য হয়তো দলীয় মনোনয়ন পাবেন না।

তিনি বলেন, 'আমি শুধু আপনাদের মুখ দেখে মনোনয়ন দেবো না, আগামী নির্বাচনে যাদের জেতার সম্ভাবনা আছে তাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।'

প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী নির্বাচনে কারও কোনো দায়িত্ব নেবেন না।

তিনি বলেন, 'আপনাদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং নির্বাচনে জিততে হবে।'

আর সে লক্ষ্যে তিনি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সবাইকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেন।

বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এটি নির্বাচনে তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল পরিহার করে আগামী নির্বাচনে দলের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।'

বৈঠক প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারে এবং এ কারণেই পাশ্চাত্যের অনেকেই নির্বাচন ছাড়া অনির্বাচিত সরকার চান। কারণ, অনির্বাচিত সরকার থাকলে তাদের প্রভাব বিস্তার করা সুবিধাজনক।

তিনি বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

হানিফ আরও বলেন, বিভিন্ন জরিপ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, 'যাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আছে তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। প্রার্থীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।'

সভায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, রাজবাড়ীর কাজী কেরামত আলী, লক্ষ্মীপুরের নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, চট্টগ্রামের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা বক্তব্য দেন।
 

Comments

The Daily Star  | English

July charter implementation: What notes of dissent could mean

The July National Charter, finalised after weeks of consensus talks, faces a delicate challenge over notes of dissent, most of them from the BNP and its allies.

15h ago