'মনে হয়েছে, আমি যুদ্ধের মধ্যে ছিলাম'
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম টাইমড আউটের ঘটনায় উত্তাল ক্রিকেট বিশ্ব। ওই ঘটনার পরবর্তীতে মাঠেই কয়েকবার দুদলের বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটল। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউট হওয়ার পেছনের মূল কারিগর সাকিব আল হাসান ম্যাচের পর জানালেন, কীভাবে সেই আউটের চিন্তার কথা তার মাথায় এলো। ম্যাচের মাঝের উত্তেজনাময় পরিবেশই তাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করেছে বলেও উল্লেখ করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রত্যাশিতভাবেই, শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুসল মেন্ডিস ওই আউট নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন।
দিল্লিতে সোমবারের ঘটনাবহুল ম্যাচে ৩ উইকেটে জয়ের পর প্রেজেন্টেশনে সাকিব পুরো ঘটনা ব্যাখা করেন, 'আমাদের একজন ফিল্ডার আমার কাছে আসে এবং বলে, "এখন যদি আপনি আপিল করেন, তাহলে সে (ম্যাথিউস) আউট হবে।" এরপর আমি আপিল করি। আম্পায়ার আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, আমি সিরিয়াস কিনা, আমি পরে আপিল তুলে নিব কিনা। আমি বলেছি, এটা যদি নিয়ম হয় এবং আইনের মধ্যে পড়ে, আমি আপিল তুলে নিব না।'
অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে হওয়া শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচে যুদ্ধংদেহী ভাব ছিল জানিয়ে সাকিব বলেন, 'এটা আইনের মধ্যে আছে। আমি জানি না এটা সঠিক নাকি ভুল। আমার মনে হয়েছে, আমি যুদ্ধের মধ্যে ছিলাম। তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হতো যাতে আমি নিশ্চিত করতে পারি আমার দল জিতবে। যা-ই করার ছিল, আমাকে করতে হতো।'
টাইমড আউটের এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক যে হবে, সেটা জানেনও সাকিব। তবে আইসিসির নিয়মের মধ্যে আছে বিধায় আউটের সুযোগ নিতে তার কোনো দ্বিধা নেই, 'সঠিক নাকি ভুল, বিতর্ক হবে। তবে এটা যদি আইনের মধ্যে থাকে, তাহলে এমন সুযোগ নিতে আমার আপত্তি নেই।'
লঙ্কান অধিনায়ক মেন্ডিস প্রতিপক্ষ অধিনায়ক সাকিবের ব্যাপারে কিছু বলেননি। তবে মনে করেন, আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেছেন, 'এটা খুবই হতাশাজনক। যখন অ্যাঞ্জেলো (ম্যাথিউস) ক্রিজে আসে, তখনও পাঁচ সেকেন্ড বাকি ছিল (নির্ধারিত দুই মিনিটের) তার প্রস্তত হওয়ার জন্য। এরপর সে তার হেলমেটের স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে গেছে দেখতে পায়। এটা (ইকুইপমেন্ট ফেইলিয়র)। আমি হতাশ যে আম্পায়াররা তখন সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেননি এবং সেখানে কমন সেন্স যোগ করতে পারেননি।'
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ২৫তম ওভারে সাদিরা সামারাবিক্রমা আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর টাইমড আউটের কাণ্ড ঘটে। ম্যাচের ওই সময়ে ম্যাথিউস শ্রীলঙ্কার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন বলেও হতাশা অনেক বেশি লঙ্কান কাপ্তানের, 'দুর্ভাগ্যজনক যে এটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হয়েছে। উইকেট পড়ার পর অ্যাঞ্জেলো এসে কিছু রান করবে, আমাদের সেই প্রত্যাশা ছিল। এটা হতাশাজনক যে, আম্পায়াররা সেই সময়ে ভালোমতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।'
ওই আউটের পর ২৮০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নামা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। লঙ্কান ফিল্ডারদের শারীরিক ভাষা ছিল আগ্রাসী। কয়েকবার বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা যায় দুই দলের ক্রিকেটারদের। এমন পরিস্থিতি ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে সাকিবকে বরং সাহায্যই করেছে। তিনি বলেন, 'আমার মনে হয়েছে, সেটা সাহায্য করেছে। আরও একটু লড়াকু মনোভাব এসেছে। আমার ৩৬ বছর বয়স, সাধারণত সেই লড়াকু ভাব সব সময় আসে না। আমি ভেবেছি, আজকে সেটা এক অর্থে সাহায্য করেছে।'
Comments