অবরোধ-হরতালের কথা শুনে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে: তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রামে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ’ শীর্ষক ম্যুরাল ও তথ্যচিত্র উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ | ছবি: স্টার

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'যারা পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পোড়ায়, হাসপাতালে হামলা চালায়, কোরআন শরীফ পোড়ায়, গাড়ি-ঘোড়া ও স্কুলঘর পোড়ায়, ওরা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক কর্মসূচিও এগুলো নয়। রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ হয়, আগুন সন্ত্রাসীদের সাথে সংলাপ করা যায় না। বরং, তাদেরকে নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর। যারা এই সমস্ত কথা বলেন তাদের কাছে প্রশ্ন, সন্ত্রাসীদের সাথে কী আলোচনা হয়? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে হয়।'

আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের জামালখান সড়কে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের তত্ত্বাবধানে এবং ডায়মন্ড সিমেন্ট ও দৈনিক আজাদী'র অর্থায়নে 'বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ' শীর্ষক ম্যুরাল ও তথ্যচিত্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গত ১৪ জুন বিএনপির সমাবেশে যাবার সময় মিছিলকারীরা চট্টগ্রামের জামালখান সড়কের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ইতিহাস ঐতিহ্যের তথ্যচিত্রগুলো ভাঙচুর করে। পরে সেগুলো পুনরায় স্থাপন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত কিছু সৃষ্টি করতে পারে না, তারা এখন গাড়ি-ঘোড়া পোড়াচ্ছে, মানুষের ওপর আগুন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ওরা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত দেশ-জাতি, সমাজ ও জনগণের শত্রু। সুতরাং এদেরকে সবার চিহ্নিত করে রাখা দরকার। এরা যতদিন এভাবে ফণা তুলবে ততদিন দেশ ও সমাজ হুমকির মুখে থাকবে।'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, তাদের অনুকরণে বিএনপি-জামায়াত পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। রাজনীতির নামে পেট্রোল বোমা দিয়ে আগুন সন্ত্রাস দুনিয়ার কোনো জায়গায় হয় নাই। আমরা যখন পাকিস্তান কিংবা পশ্চিমাদের অধীনে ছিলাম তখনও প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে দিয়ে বহু মিছিল গেছে, এসেছে। এদেশের বায়ান্ন বছরের ইতিহাসে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবন কিংবা জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা হয় নাই। যেটি বিএনপি-জামায়াত করেছে। সুতরাং এরা দেশ-জাতি এবং সমাজের শত্রু। এরা হিংস্র হায়েনা ও জঘন্য জানোয়ারের চেয়েও হিংস্র। সুতরাং এই জানোয়ারদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।'

তিনি বলেন, 'আজকে বাচ্চারা নির্ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। এর মধ্যে একটি স্কুল ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। এই বাচ্চারা কী অপরাধ করেছে? আমাদের সরকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে, পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকেও পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে—কেউ আগুন সন্ত্রাস চালালে কিংবা কেউ চালানোর উদ্যোগ নিচ্ছে এরকম জানতে পারলেও তাদের ধরিয়ে দিবেন। তাহলে এদেরকে নির্মূল করা সম্ভবপর হবে।'

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'দুঃখজনক হলেও সত্য গত ১৪ জুন বিএনপি-জামায়াতের মিছিল থেকে এখানে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ইতিহাস ঐতিহ্যের চিত্রগুলো ভাঙচুর করা হয়। তারা ভাঙচুর করে শুধু ক্ষান্ত হয়নি, ভাঙচুর করার সময় তারা উল্লাসও করেছে। অর্থাৎ এগুলো ধ্বংস করে তারা উল্লসিত হয়েছে। আজকে আবার সেগুলোকে নতুন আঙ্গিকে স্থাপন করা হয়েছে।'

পুনঃস্থাপনের জন্য জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন এবং পৃষ্ঠপোষক ডায়মন্ড সিমেন্ট ও দৈনিক আজাদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আসলে বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংসই করতে জানে। এই ম্যুরাল ও ইতিহাস ঐতিহ্যের তথ্যচিত্রগুলো কী অপরাধ করেছিল, সেগুলো যে ভাঙচুর করল? যদি জনগণের রায়ে আমরা আবার সরকার গঠন করতে পারি, শেষ আগুন সন্ত্রাসী পর্যন্ত ইনশাল্লাহ নির্মূল করা হবে এই দেশ থেকে।'

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি আবারও অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন—এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপি-জামায়াতের এই অবরোধ কেউ মানছে না। রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া চলছে, অফিস আদালত খোলা। স্কুল-কলেজও খোলা।'

'তারা কিছু কিছু জায়গায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষের মাঝে ভয় সঞ্চার করা ছাড়া আর কিছু করতে পারেনি। মাঝখানে বিরতি দিয়ে দুইদিন পরপর তাদের এই অবরোধ-হরতালের কথা শুনে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে,' বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

5h ago