দলের পরিকল্পনা বদলে যাওয়ায় বাদ নাসুম

Nasum Ahmed

আসন্ন নিউজিল্যান্ড সিরিজের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড- কোনটিতেই নেই নাসুম আহমেদ। বাঁহাতি স্পিনারকে নিয়ে নাকি নির্বাচকদের পরিকল্পনাই বদলে গেছে। এমনটা জানিয়েছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তাদের আগের পরিকল্পনাতেই গলদ ছিল?

একটু পেছন ফিরে তাকালে স্পষ্ট হবে। নাসুম আহমেদের এশিয়া কাপ দলের অন্তর্ভুক্তির সময়ে ফিরে যাওয়া যাক। এশিয়া কাপের আগে চণ্ডিকা হাথুরুসিংয়ের অধীনে যে চার সিরিজ খেলেছিল  বাংলাদেশ, তাতে একটিমাত্র সিরিজে ছিলেন নাসুম। বাকি তিন সিরিজে থাকা তাইজুল ইসলামের জায়গায় কেন নাসুম, এই প্রশ্নের উত্তরে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু তখন বলেছিলেন, 'তাইজুল অনেকটা আক্রমণাত্মক স্পিনার, নাসুম একটু রক্ষণাত্মক। টিম ম্যানেজমেন্ট যে পরিকল্পনা দিয়েছে, আমরা চিন্তা করে নাসুমের দিকে গিয়েছি কারণ শ্রীলঙ্কাতে এশিয়া কাপে ফ্ল্যাট উইকেটেও খেলতে পারে, লাহোরেও ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা হতে পারে, যেখানে ডিফেন্সটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে চিন্তা করেই নাসুমকে নেওয়া।'

এবার চলে আসুন বিশ্বকাপের পরের দৃশ্যপটে। সিলেট টেস্ট চলার সময়েই বৃহস্পতিবার ঘোষিত হয় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নির্দিষ্ট ওভারের সিরিজের স্কোয়াড। পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার হাবিবুল কথা বলেন সেই স্কোয়াড নিয়ে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারে তিনি নাসুমের প্রসঙ্গে বলেন, 'নাসুম তো সাদা বলে নিয়মিত খেলছিল। তাকে আমরা দেখেছি অনেক। নাসুম যে খুব খারাপ করেছে, তা বলব না। তবে ওর কাছ থেকে আমরা যেটা চাচ্ছিলাম, উইকেট শিকার করা, সেটা সাম্প্রতিক সময়ে পাচ্ছিলাম না।'

তাকে উইকেট নেওয়ার চেয়ে বেশি রক্ষণের দায়িত্ব পালনের ভূমিকায় দলে নিয়েছিলেন। সে কথাতেই তিনি এলেন অবশ্য একটু পর, জানালেন পরিকল্পনায় বদলের কথা। হাবিবুল বাশার বলেন, 'হ্যাঁ, ওকে একটা ভূমিকা পালন করতে বলা হয়েছিল, আক্রমণ করার চেয়ে একটু রান বাঁচানো। তবে এরকম একজনকেও আমাদের দরকার, যে উইকেট নিতে পারে। এখন যে ফরম্যাট, মাঝখানে উইকেট নিতে না পারলে রান বাঁচানো কঠিন হয়। তিনশর বেশি রান হয়েই যায়। এজন্যই মনে হয়েছে, এমন একজনকে দেখে চেষ্টা করি, যে মাঝের ওভারগুলোয় উইকেট নিতে পারে।'

এশিয়া কাপ থেকে শুরু করলে দেখা যায়, নাসুম ৮ ম্যাচে মাত্র চার উইকেট নিতে পেরেছেন। মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগের সিরিজ বাদ দিয়ে, যদি শুধু এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ হিসাবে আনা হয়, তাহলে এতে নাসুম ৫ ম্যাচে উইকেট পাননি একটিও। ডিফেন্সিভ ভূমিকায় থাকা এ বোলারের ইকোনমি রেট ছিল ৫.৬৮। পরিকল্পনায় বদল যে শুধুই একমাত্র কারণ নয়, তাও জানান সুমন, 'বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স কিছুটা ভাবনায় রেখেছি আমরা অবশ্যই। তবে আমরা এখন চাচ্ছি একজন আগ্রাসী বোলার, সত্যি বলতে। যে কি না আমাদের উইকেট এনে দেবে।'

নির্বাচকদের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, দল নির্বাচনে সিদ্ধান্ত সমন্বিত ব্যাপার। নাসুমের পারফরম্যান্স একপাশে রেখে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনায় তাই প্রশ্ন ওঠেই যায়। বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের মঞ্চে যেখানে স্পিন সহায়ক উইকেটের সম্ভাবনা কম ছিল। সেখানে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে 'ডিফেন্সিভ' একজনকে নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত ছিলো?

বাংলাদেশের দুই অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ দলে অটো-চয়েজ। স্পিন সহায়ক উইকেটে তৃতীয় স্পিনার নিয়ে খেলতে নামা মানেই তো আক্রমণের ব্যাপার। ফ্ল্যাট উইকেটে হলে তো তৃতীয় স্পিনার নিয়ে উল্টো বিপদ বাড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি। পুনে, ওয়াঙ্খেড়ের ব্যাটিং পিচে সুযোগ পেয়ে ভোগান্তিতেও পড়েছিলেন নাসুম।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

3h ago