জাপানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৮

ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অনেক ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ছবি: রয়টার্স

জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১৩৭ জন। এখনো অনেকেই নিখোঁজ আছেন।

ইশিকাওয়া প্রিফেকচার সূত্রে সুজুতে ২০ জন, ওয়াজিমাতে ১৯ জন, নানাওতে ৫ জন, আনামিজুতে দুজন, হাকুইয়ে একজন এবং অন্যস্থানে আরও একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে নিগাতা প্রিফেকচারে ১৯ জন, তোয়ামা প্রিফেকচারে ২৪ জন, ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে ৮৫ জন, ফুকুই প্রিফেকচারে ৫ জন গিফুতে একজন, ওসাকাতে একজন এবং হিয়োগো প্রিফেকচারে দুজন রয়েছেন।

গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে টোকিও থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে জাপান সাগরের তীরে অবস্থিত ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। 

ভয়ে গতকাল রাতে অনেক মানুষ ঘুমাতে পারেননি। তবে আজ সকালে সুনামি সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বাইরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে হওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। যতই সময় যাচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহ চিত্র ততই প্রকাশ পাচ্ছে। 

ভূমিকম্পের পর ক্রমাগত আফটারশক হচ্ছে। প্রচুর বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। একটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় বড় আকারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং দুই শতাধিক স্থাপনায় আগুন লেগে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ ছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-ঘরেও আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিছু ভাঙা বাড়ির নীচে মানুষ আটকা পড়েন। সুজু বন্দরে নোঙ্গরকৃত একাধিক জাহাজ ডুবে যায়।

রাস্তায় বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছু রাস্তাঘাট একেবারে ভেঙে গেছে। পাহাড় ধ্বসে পড়েছে। কিছু এলাকায় লিকুইফেকশন হয়েছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। গ্যাস লিক হয়েছে। পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। মানুষ পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। গাড়িতে করে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। মোবাইল সংযোগ বিঘ্নিত। আকাশপথ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আজ সকালে সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং সহায়তা দেওয়ার জন্য ইশিকাওয়াতে একটি জরুরি দুর্যোগ ত্রাণকেন্দ্রের সদর দপ্তর স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্যোগের প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দুর্যোগের শিকারদের জীবন বাঁচানো সময়ের বিরুদ্ধে একটি দৌড়। বেঁচে থাকা একটি প্রাণও যেন না ঝরে সেদিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।'

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সম্প্রচারকারী এনএইচকের তোলা ফুটেজে একটি সাততলা বিল্ডিং পাশের দিকে ভেঙে পড়তে দেখা যায়।  

প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সেলফ ডিফেন্স বাহিনী একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করে এক হাজার কর্মীর মাধ্যমে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং আরও ১০ হাজার কর্মী উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কাজে নিয়োজিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

7h ago