ঠান্ডা থেকে বাঁচতে খড়কুটোতে আগুন, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ দগ্ধ

অগ্নিদগ্ধ কল্পনা বেগম। ছবি: সংগৃহীত

তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে খড়কুটোর আগুনে তাপ পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ কল্পনা বেগম (১৯)।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামে গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

অগ্নিদগ্ধ কল্পনা বেগমকে প্রথমে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় পরিবার। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলা হয়।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আাবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সামিরা হোসেন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কল্পনা বেগমের শরীরের প্রায় ৬৫-৭০ শতাংশ পুড়েছে। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে বার্ন ইউনিট নেই তাই তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

তবে কল্পনাকে ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে ফেরত নিয়ে গেছেন তার পরিবারের লোকজন।

বাবা ও স্বামী দুজনই দিনমজুর। বলছেন ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো আর্তিক সঙ্গতি তাদের নেই। বর্তমানে কল্পনাকে তার বাবার বাড়ি মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

কল্পনার স্বামী রুবেল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শনিবার রাতে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে কল্পনা বাড়ির উঠানে খড়কুটোর আগুন জ্বালায়। এসময় তার কাপড়ে আগুন লেগে যায়। এতে কল্পনার বুক থেকে শরীরের নিচের অংশ আগুনে ঝলসে গেছে। তার স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তসত্ত্বা। কল্পনাকে তার বাবার বাড়িতে রাখা হয়েছে। তাদের পক্ষে কল্পনাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়।

কল্পনা বেগমের বাবা আব্দুল করিম বলেন, কল্পনাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু আমাদের সেই আর্থিক সামর্থ্য নেই। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কল্পনাকে বাড়িতে ফেরত আনা হয়েছে। বাড়িতে রেখে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তবে বাঁচার জন্য শুধু কাঁদছে কল্পনা। অগ্নিদগ্ধ কল্পনাবলেন, অনাগত সন্তানের জন্য বাঁচতে ইচ্ছা করছে। তিনি মারা গেলে অনাগত শিশুটিও মারা যাবে। তিনি বাঁচবেন কিনা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না। খড়কুটোর আগুনে শাড়িতে কখন আগুন ধরে গিয়েছিল তিনি টের পাননি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবুল কালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কল্পনার স্বামী ও বাবা নিতান্ত গরীব। তারা কোনোভাবেই কল্পনার চিকিৎসার খরচ যোগাতে পারছেন না। তিনি স্থানীয় লোকজনের কাছে আর্থিক সহায়তা সংগ্রহ করছেন। কিন্তু এ টাকা দিয়েও কল্পনার উন্নত চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না।

Comments

The Daily Star  | English

Debunking DMP claim, frame by frame

The Daily Star photographer, who was present at the scene, described the incident as it unfolded

42m ago