চীন-ভারত-রাশিয়া আমাদের বন্ধু হতে পারে, কিন্তু ক্ষমতায় বসায়নি: ওবায়দুল কাদের

শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: বাসস

বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগে শিগগির দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, 'দেশের মানুষ সংকটে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হৃদয়ে আঘাত লাগে। সামনে পবিত্র রমজান মাস, অচিরেই আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। আস্থা হারাবেন না। বিএনপি'র কথায় কান দেবেন না।'

ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে এ কথা বলেন। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক প্রমুখ। 

বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিদেশিদের ভয় দেখান? ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের ভোটে সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার জনগণের সরকার, নির্বাচিত সরকার। যেখানে ২৮টি দল অংশ নিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'সরকারকে যারা বিদেশিদের ভয় দেখায়, তাদের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ আছে। চীন-ভারত-রাশিয়া আমাদের বন্ধু হতে পারে, কিন্তু আমাদের সরকারকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি। দেশের মানুষের বিপুল ভোটে এ সরকার নির্বাচিত হয়েছে। শেখ হাসিনা মহান আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।

বিএনপির আন্দোলন কবে হবে, প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, '১৫ বছর গেল, সামনে আরও ৫ বছর। লন্ডনের তারেক রহমানে আর কারও আস্থা নেই। নেতাকর্মীরা এখন আর তারেকের ফরমায়েশে কান দেয় না।'

আগামী ৩০ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচির দিনও সারা দেশে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'কালো পতাকা মানে শোকের মিছিল। এ আরেক ভুয়া কর্মসূচি। ৩০ তারিখে আবার ডেকেছে, সেটাও ভুয়া। আপনারা সবাই ৩০ জানুয়ারি সকাল থেকে মাঠে থাকবেন।'

তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ৩০ তারিখ পতাকা হাতে "শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন" সমাবেশে অংশ নেবেন। তারা সতর্ক পাহারায় থাকবেন।'

বিএনপিকে 'অপ-সাম্প্রদায়িক শক্তি' হিসেবে অভিহিত করে- ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এদের আমরা আর বাড়তে দিতে পারি না, এদের রুখতে হবে। স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এদের মোকাবিলা করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচনের খেলা শেষ, এখন খেলা রাজনীতির। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও খেলা হবে। খেলা হবে হরতাল ও আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ৩০ তারিখ আবার কালো পতাকা মিছিল। সেদিন আপনারা লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবেন।'

সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'কালো পতাকা কাকে দেখাবে? বিএনপির উচিত ছিল, নেতারা যারা ব্যর্থ কর্মসূচি দিয়েছে, তাদের কালো পতাকা দেখিয়ে তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা। এখন বিএনপিকে আগামী পাঁচ বছর নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এমন কোনো হীন কাজ নেই, যা তারা (বিএনপি) করেনি। বিদেশি ষড়যন্ত্রসহ সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আজ আমাদের আনন্দের দিন, পঞ্চমবারের মতো আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার সরকার এসেছে। এতে দক্ষিণ আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।'

আন্তর্জাতিক বিশ্ব এই সরকারকে সমর্থন জানাচ্ছে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ করার প্রত্যয় নিয়ে শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনে না এসে, নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা করে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে যে অপরাধ করেছে, সে অপরাধের বোধ তাদের হবে। তারা হয় তাদের ভুল স্বীকার করে রাজনীতি থেকে বিদায় নেবে, না হয় জনগণের কাছে ভুল স্বীকার করে আবার রাজনীতিতে আসবে।'

দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করেছে। বিএনপি কালো পতাকা কাকে দেখাতে চায়? জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে। তাদের আন্দোলনে বিদেশিরা সাড়া দেয়নি। দেশের জনগণ তাদের কালো পতাকা দেখিয়েছে।'

মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, 'নির্বাচন কোনো দল বয়কট করলে কিছু যায় আসে না। নির্বাচনে এই দেশের জনগণের অংশগ্রহণ বলে দেয় তাদের ষড়যন্ত্র বানচাল হয়ে গেছে। যতক্ষণ জনগণ থাকে ততক্ষণ বানচাল করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, এই অপশক্তির বিলীন দেখতে চায়।'

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

6h ago