বাবার খাটুনি যাতে বৃথা না যায়, সেই চেষ্টাই করেছেন সরফরাজ

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের টেস্ট দলে জায়গা করে নিয়েই দেশে-বিদেশে আলোড়ন তুলেছেন সরফরাজ খান। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া ব্যাটার অবশ্য জায়গা পাননি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশাখাপত্তনম টেস্টের একাদশে। তবে এই ম্যাচের আগে তিনি জানিয়েছেন, ধৈর্য ধরে অপেক্ষায় থাকার কথা। সেই সঙ্গে শুনিয়েছেন, তার ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে আসার পেছনে বাবা নওশাদ খানের অবদানের গল্প।

২৬ বছর বয়সী সরফরাজ এখন পর্যন্ত ৪৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। সেখানে তার পারফরম্যান্স মুগ্ধতা জাগানিয়া। ৬৬ ইনিংসে ৬৯.৮৫ গড়ে তার সংগ্রহ ৩৯১২ রান। ১৪টি হাফসেঞ্চুরির সঙ্গে ১১টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।

সরফরাজের ভারতের সাদা পোশাকের দলে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল অনেক দিন ধরেই। হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত আগের টেস্টে লোকেশ রাহুল চোট পাওয়ায় অবশেষে কপাল খুলে যায় তার। তবে দলে ডাক পেলেও অভিষেকের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে তাকে। শুক্রবার শুরু হওয়া বিশাখাপত্তনম টেস্টের একাদশে রাহুলের বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন রজত পতিদার। সরফরাজের আগে থেকেই স্কোয়াডে থাকা রজতের এটি অভিষেক টেস্ট।

দলে সুযোগ পাওয়ার আগে ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছেন। সেটাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন সরফরাজ। বিশাখাপত্তনম টেস্টের আগে বিসিসিআই টিভিকে তিনি বলেছেন, 'এই খেলাটিই ধৈর্যের বিষয়। যদি টেস্ট ক্রিকেট খেলতে হয়, তবে আমাকে ধৈর্য ধরতে হবে।'

বাবার দেওয়া উপদেশের কথা স্মরণ করেছেন তিনি, 'জীবনে এমন কিছু সময় আসে, যখন আমরা তাড়াহুড়ো করার চেষ্টা করি। আমার চোখে জল আসত (যখন আমি দলে ডাক পেতাম না)। আমার আব্বু আমাকে বলেছিলেন, "কঠোর পরিশ্রম করতে থাকো, কেউ তোমাকে আটকাতে পারবে না।" আমি মনে করি, নিজের উপর বিশ্বাস রাখা এবং ধৈর্য ধরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের থেকেও আমি আমার বাবার জন্য বেশি খুশি। এটা খুবই গর্বের বিষয় যে একশ কোটির বেশি মানুষের একটি দেশে থেকেও আমি দলে আছি।'

প্রথম শ্রেণিতে সবশেষ ম্যাচেই বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করেন সরফরাজ। আহমেদাবাদে ভারত 'এ' দলের হয়ে ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিপক্ষে ১৬০ বলে খেলেন ১৬১ রানের ইনিংস। এরপর কলকাতায় রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার হয়ে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে খেলার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন তিনি। সেসময় জাতীয় দলে ঢুকে পড়ার খবর পান।

শুরুতে যদিও বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না সরফরাজ, 'প্রথমে আমি এটা বিশ্বাস করিনি। আমি নিশ্চিত ছিলাম না যে আমি সত্যিই জায়গা পেয়েছি। এরপর আমি বাসার সবাইকে বলি। আমার বাবা তখন গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। আমি তাকে ফোন করি। সবাইকে বলি— আমার স্ত্রী, আব্বু, আম্মিকে। সবাই খুব খুশি এবং আবেগপ্রবণ হয়েছিল।'

নওশাদের মাধ্যমেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়েছিল সরফরাজের। বাবাই তার শৈশবের কোচ। বাবার ও নিজের পরিশ্রমকে সফলতায় রূপ দিতে পেরে সরফরাজের ভীষণ খুশি লাগছে, 'সবাই জানে, আমার বাবা আমার কোচ ছিলেন। তাই আমি সব সময় চেষ্টা করেছি যাতে তার খাটুনি বৃথা না যায়। একদিন না একদিন আমি ভারতের দলে নির্বাচিত হতে চেয়েছি। এখন আমি মনে করি, আমি যে পরিশ্রম করেছি তা ব্যর্থ হয়নি। আমি এখন দলে আছি, আমি রোমাঞ্চিত।'

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

8h ago