বরগুনা

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার কাজ শেষ না হতেই ধসের শঙ্কা

বরগুনার আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটতে গিয়ে অনেক জায়গায় ২৫-৩০ ফুট পর্যন্ত পর্যন্ত গভীর করে খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: সোহরাব হোসেন/ স্টার

বরগুনার আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কারের কাজ শেষ না হতেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধের ঢালের মাটি কেটে গভীর খাদের সৃষ্টি করায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে বাঁধসহ পার্শ্ববর্তী বাড়িঘর ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। এভাবে বাঁধ সংস্কার করায় বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার ৪৩/১ পোল্ডারের আব্দুল আজিজ তালুকদার ব্রিকফিল্ড থেকে আমড়াগাছিয়া হাইওয়ে পর্যন্ত ২ কিলোমিটার এবং নাপিতবাড়ি স্লুইস গেট থেকে দেড় কিলোমিটারসহ মোট সাড়ে ৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে এ কাজটি পায় খুলনার আমিন অ্যান্ড কোম্পানি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু স্থানীয়ভাবে সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন বরগুনার বাদশা মিয়া।

গত নভেম্বর মাসে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয় এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাটি কাটার যন্ত্র বা এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটতে গিয়ে অনেক জায়গায় ২৫-৩০ ফুট পর্যন্ত গভীর করে খাদের সৃষ্টি হয়। এতে বাঁধ ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কয়েকটি স্থানে ইতোমধ্যেই মাটিতে ধস দেখা দিয়েছে।

১৯৬৭-৬৮ সালে এ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের পর আশেপাশের এলাকা থেকে ভূমিহীন, হতদরিদ্র মানুষজন বাঁধের ঢালে এসে বসবাস শুরু করেন। বাঁধের অনেক জায়গায় মাটি ধসের কারণে তারাও আছেন শঙ্কায়।

সম্প্রতি উত্তর আমড়াগাছিয়া এবং চরখালি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে বাঁধের ঢালের মাটি এমন ভাবে কাটা হয়েছে যে কোনো সময় বাঁধ ধসে পড়তে পারে।

বাঁধের ঢালে বসবাস করা মাসুদ সিকদার বলেন, আমাদের জায়গা জমি নেই, ভূমিহীন। সরকারি এই বাঁধের জমিতে বাপ-দাদার আমল থেকে বাস করছি। বাঁধের পাশে গভীর খাদ সৃষ্টি হওয়ায় আতঙ্কে আছি। ছেলে-মেয়ে নিয়ে রাতে ভয় করে।

গ্রামের আরেক বাসিন্দা খালেক মাতুব্বরের বাড়ির পেছন থেকেও গভীর করে মাটি কাটায় ওই বাড়িটিও পড়েছে ঝুঁকির মধ্যে।

ঘটখালী গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সিকদার ও আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, যেভাবে বাঁধের ঢালের মাটি কেটে বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে তাতে বর্ষা মৌসুম শুরুর সাথে সাথে বাঁধের মাটি ধসে পড়তে পারে।

তবে সাব ঠিকাদার বাদশা মিয়া বলেন, ঢাল থেকে যেভাবে মাটি কাটা হয়েছে তাতে বাঁধের মাটি ধসে পড়বে না।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজিজুর রহমান বলেন, বাঁধের পাশে সরকারি জমির মাটি কাটা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ধসের কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ বাঁধের ঢালের দুই ধারে ঘাস লাগিয়ে সুরক্ষা দেওয়া হবে।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুদীপ্ত চৌধুরী বলেন, বন্যার কবল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের জান-মাল রক্ষার জন্য বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে। বাঁধের মাটি ধসের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Rampal fouling 2 Sundarbans rivers

The Rampal power plant began operation in late 2022 without an effluent treatment plant and has since been discharging untreated waste into the Pasur and Maidara rivers next to the Sundarbans.

4h ago