অসাধু ব্যবসায়ী-জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

অসাধু ব্যবসায়ী-জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

কিশোর গ্যাং, মাদক, অসাধু ব্যবসায়ী ও জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে কুর্মিটোলা র‍্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসে আমরা জিরো টলারেন্স। আমি ধন্যবাদ জানাই র‌্যাবের সকল সদস্যকে; জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ ভূমিকা তারা রেখেছেন।'

তিনি বলেন, 'আমরা বলতে পারি, এই দেশে জঙ্গিবাদের একটি মাত্র ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা আমরা মোকাবিলা করেছিলাম—সেটা হলি আর্টিজানের ঘটনা। তারপর থেকে আমাদের এই দেশে কিন্তু সেই ধরনের বড় ঘটনা ঘটতে পারেনি, কারণ আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং প্রতিটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অত্যন্ত সক্রিয়। বিশেষ করে র‌্যাবের জঙ্গিবিরোধী ভূমিকার জন্য আমি প্রশংসা করি।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের অনেক সমস্যা ছিল। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অবৈধ অস্ত্র, মাদক, বিভিন্ন চরমপন্থা, জলদস্যু, বনদস্যু, একে একে প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু জায়গায় অ্যাকশন নিয়ে, কিছু জায়গায় সমঝোতা দিয়ে, কিছু জায়গায় বুঝিয়ে-সুঝিয়ে—প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিন্তু সাফল্য আমরা অর্জন করেছি। আজ সুন্দরবন বনদস্যু মুক্ত হয়েছে। যারা সারেন্ডার করেছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।'

অপরাধীদের পুনর্বাসনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'তাদের পুনর্বাসন করে দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকাকে আরও সুন্দর করে দেওয়া, সেই ব্যবস্থাটাই আমরা নিয়েছি যেন আবার তারা বিপথে না যায়। প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজ আমরা রেখে যাচ্ছি।'

এ সময় কিশোর গ্যাং, মাদক, নারীর ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আরেকটি বিষয়ে নজর দিতে হবে—এখন রোজা সামনে, এই রমজান মাসে; এটা খুব দুর্ভাগ্যের বিষয়, রমজান বলা হয়েছে সংযমের মাস। সংযমতাকে সেখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখি, আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, তারা যেন সংযমতার পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে পড়ে। যে পণ্যগুলো আমাদের প্রয়োজন, সেগুলো মজুত করে রাখা, সেগুলোর দাম বৃদ্ধি করা, নানা রকমের কারসাজি করে থাকে।

'এই অসাধু ব্যবসায়ী, পাশাপাশি যারা চোরাকারবারি, তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ঈদ সামনে আসলেই জাল মুদ্রার সরবরাহটা বেড়ে যায়। সেসব বিষয়েও নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। যদিও এর ওপর অভিযান চলছে, অভিযানটা আপনারা অব্যাহত রাখবেন সেটাই আমরা চাই,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা চাই, আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের দেশকে আরও উন্নত করতে হবে। আমাদের যে সমস্ত সম্পদ, সেগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। সেগুলো সংরক্ষণ করেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।'

বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরে বাংলাদেশ বদলে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আজকে যার বয়স ১৫ বা ২০ বছর বা ২৫ বছর, তারা বোধ হয় চিন্তাও করতে পারবে না ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ কী ছিল! সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, খুন, সেশন জট, নানা ধরনের সামাজিক-অসামাজিক কাজে একটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল। আজকের বাংলাদেশ তা নয়। আজকের বাংলাদেশ জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সর্বক্ষেত্রে অগ্রগামী।'

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Time’s List: Yunus among 100 most influential people

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has been named among TIME magazine’s 100 Most Influential People of 2025.

6h ago