‘বয়কট ইন্ডিয়া’ প্রচারণা: দ্বিধায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা

সহিংসতার অভিযোগে বিএনপি ৪৪ নেতাকর্মী বহিষ্কার

ভারতীয় পণ্য বর্জনের চলমান প্রচারণায় বিএনপির এখনই সম্পৃক্ত হওয়া উচিত হবে না বলে মনে করছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

তাদের ভাষ্য, এই প্রচারণাকে সমর্থন করার জন্য অভ্যন্তরীণ চাপ থাকলেও বিএনপি এখনো এ বিষয়ে তাদের অবস্থান চূড়ান্ত করতে পারেনি।

শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টসহ কিছু মানুষ জানুয়ারির শেষদিকে এই প্রচারণার ডাক দেন।

সোমবার রাতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নেওয়া এক সদস্য বলেন, এই প্রচারণার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এখন বিএনপি এই প্রচারণায় অংশ নিলে ব্যাপারটিকে ভিন্নভাবে নেওয়া হবে এবং শেষ পর্যন্ত হিতে বিপরীত ফল বয়ে আনতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের পর দলের অভ্যন্তরে ভারতবিরোধী মনোভাব যে তুঙ্গে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এই প্রচারণার সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বিষয়টি নিয়ে একটি কৌশল প্রণয়নের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, 'দলের পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর দলের অবস্থান পরিষ্কার হবে।'

এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। কিন্তু বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে কেউই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

গত ২০ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রচারণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় ভারতীয় শাল ছুড়ে ফেলেন তিনি।

পরে বিএনপির আরও কয়েকজন নেতা ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচারণার পক্ষে কথা বলেন।

সোমবারের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির কোনো সদস্যই রিজভীর বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেননি। কিন্তু একজন সদস্য বৈঠকে বলেন, রিজভী যেভাবে শাল ছুড়েছেন, তা শোভনীয় নয়।

তখন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, রিজভী পরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা হিসেবে নয়, তিনি ব্যক্তিগতভাবে শাল ছুড়েছেন।

কমিটির আরেক সদস্য সভায় বলেন, (বাংলাদেশ বিষয়ে) ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে বিএনপির সমালোচনা করতে হবে। কিন্তু সেটা করতে হবে পরিকল্পিত ও যথাযথভাবে।

বিএনপির আরেক নেতা বলেন, জনগণ যদি ভারতীয় পণ্য বর্জন করা শুরু করে, তাহলে দলের কিছু করার নেই এবং দল এক পর্যায়ে জনগণের দাবি উপেক্ষা করতে পারবে না।

'কিন্তু ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রচারে সমর্থন করা দলের পক্ষে বুদ্ধিমানের কাজ হবে না', বৈঠকে তিনি বলেন।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। স্থায়ী কমিটির সব সদস্যের পর্যবেক্ষণ, দলটির নির্বাচন থেকে দূরে থাকা উচিত।

বিএনপির কয়েকজন নেতা অবশ্য বলছেন, কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া উচিত নয়।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

7h ago