গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ বিদেশি এনজিওকর্মী নিহত
গতকাল সোমবার ইসরায়েলের বিমানহামলায় গাজার কেন্দ্রে অন্তত ৫ বিদেশি এনজিওকর্মী নিহত হয়েছেন। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারের গণমাধ্যম কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ মঙ্গলবার এ বিষয়টি জানিয়েছে রয়টার্স।
নিহত পাঁচ ব্যক্তি তারকা শেফ হোসে আন্দ্রেসের এনজিও ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনে (ডব্লিউসিকে) কর্মরত ছিলেন। নিহতদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও পোল্যান্ডের নাগরিক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনাকে 'মর্মান্তিক দুর্ঘটনা' বলে অভিহিত করেছে এবং জানিয়েছে, তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিরীক্ষা পরিচালনা করে এর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবে।
সামরিক বাহিনী আইডিএফ বলেছে, 'আইডিএফ নিরাপদে মানবিক ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়ে থাকে। গাজার মানুষের জন্য ডব্লিউসিকে খাদ্য ও মানবিক ত্রাণ বিতরণের গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ছিল এবং আমরা এই উদ্যোগে সব সময় তাদের পাশেই ছিলাম।'
দেইর আল-বালাহ শহরের ওপর পরিচালিত এই হামলা অন্তত একজন ফিলিস্তিনি নাগরিকও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সরকার।
আন্দ্রেস ২০১০ সালে হাইতিতে ভূমিকম্প হওয়ার পর দেশটিতে শেফ ও খাবার পাঠান। এর মাধ্যমেই ডব্লিউসিকে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দ্রেস বলেন, 'ইসরায়েলি সরকারের উচিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। তাদের উচিত মানবিক ত্রাণ বিতরণে বাধা, বেসামরিক ব্যক্তি ও ত্রাণকর্মীদের হত্যা এবং খাবারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা। আর একটিও নিষ্পাপ প্রাণ যেন ঝরে না যায়। আমাদের সবার মাঝে থাকা মানবিক মূল্যবোধের চর্চার মাধ্যমেই আসবে শান্তি। এটা এখুনি শুরু হওয়া প্রয়োজন।'
এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থার কর্মীদের ভয় দেখানো ও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার উদ্দেশে এই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, 'বিমানহামলায় ডব্লিউসিকিচেনের ত্রাণকর্মী নিহত হওয়া খুবই হৃদয়বিদারক ও উদ্বেগজনক ঘটনা'।
'মানবিক ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে হবে, কারণ তারা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন যা অত্যন্ত জরুরি। আমরা ইসরায়েলকে এ বিষয়টির দ্রুত তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি', যোগ করেন তিনি।
ডব্লিউসিকে গাত মাসে জানিয়েছে, গত ১৭৫ দিনে তারা গাজায় চার কোটি ২০ লাখ প্যাকেট খাবার বিতরণ করেছে।
২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সংস্থাটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠী, মার্কিন সীমান্তের শরণার্থী, কোভিড মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবাকর্মী ও ইউক্রেন-গাজা সংঘাতে ভুক্তভোগীদের কাছে খাদ্য সরবরাহ করেছে।
Comments